বাংলানিউজ :

শীতকালে আমাদের দেশীয় রেসপিরেটরি ভাইরাসের বেশি সংক্রমণের ফলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়েনি বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য, করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য, দেশের অন্যতম শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।

সম্প্রতি দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে তিনি এ কথা জানান।

অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে গেছে। বর্তমানে আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। সংক্রমণের হার ৩ শতাংশের নিচে। এখন দেখতে হবে সংক্রমণের হার ৩ শতাংশের নিচে কয়দিন থাকে। সংক্রমণের এই হার যদি আরও দুই সপ্তাহ থাকে, তাহলে বোঝা যাবে করোনা নিয়ন্ত্রণের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। তাহলে আমরা এপিডেমিক লেভেল থেকে এন্ডেমিক লেভেলে পৌঁছে যাব। আমাদেরকে আরও দুই সপ্তাহ করোনা ভাইরাসের শনাক্তের হার পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সফলতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে আমরা সফল হইনি। কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে যদি করোনা নিয়ন্ত্রণ হতো, তখন সফলতার কথা বলা যেত। কিন্তু আমরা মাস্ক পরিনি, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখিনি, অন্যান্য নিয়ম কানুনও মানিনি। বাজারে ভিড়, মার্কেট খোলা, লোকজনের মুখে মাস্ক নেই। করোনাকালেও বিভিন্ন সভা, সমাবেশ এবং আন্দোলন হয়েছে। জানাজায় অনেক মানুষের সমাগম হয়েছে। তারপরেও করোনা সংক্রমণ কমে গেছে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে দেশের অন্যতম শীর্ষ এ ভাইরোলজিস্ট বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে, শীতকালে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসে মানুষজন বেশি সংক্রমিত হয়। এ বছরও শীতকালে আমাদের দেশীয় রেসপিরেটরি ভাইরাসে মানুষ বেশি সংক্রমিত হয়েছে, তার ফলে করোনা ভাইরাস পাত্তা পায়নি। আমাদের শরীরে যদি কোনো ভাইরাসের সংক্রমণ থাকে, তাহলে সেখানে আরেকটি ভাইরাস ঢুকতে পারে না। ভাইরাসের ইন্টারফেয়ারেন্সের ফলে করোনার সংক্রমণ বাড়েনি।

আমাদের দেশে করোনা ভাইরাসের যে ধরণগুলো লক্ষ্য করা গেছে, সেগুলো কি অন্যান্য দেশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও জানান, এটা হতে পারে। এসব বিষয়ে আমাদেরকে গবেষণা করে দেখা উচিৎ। আমরাতো গবেষণা করে দেখছি না। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে বলবো, গবেষণার বরাদ্দ প্রদান করতে। আমাদের গবেষণা করে এসব বিষয় দেখা উচিৎ।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিয়মিত হাত ধুতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।