ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় ২ ঘন্টা পর নিয়ন্ত্রণে আগুন

এম.এ আজিজ রাসেল :
শহরের বাজারঘাটা বড় বাজার মসজিদ রোডে ছেউরি মার্কেটের ৫ম তলায় কসমেটিক্স ও কাপড়ের গুদামে আগুন লেগেছে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ফায়ার সার্ভিসের ৩টি টিম প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যা ৬টা দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বড় বাজার জামে মসজিদ ও জম জম মার্কেটের মাঝখানে জনৈক রাখাইন নারী মাখিমী’র মালিকানাধীন ছেউরি মার্কেটের অবস্থান। ৫ তলা বিশিষ্ট এই ভবনজুড়ে প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৮—১০টি পরিবার ছাড়া ভবনের ৩য় থেকে ৫ম তলা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুদাম ভাড়া দেয়া হয়। মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় পাইকারী গার্মেন্টস পোশাকের প্রতিষ্ঠান আম্মাজান টেক্সটাইল, ফেন্সী ষ্টোর ও কসমেটিক্সের প্রতিষ্ঠান সুমন ষ্টোর অবস্থিত। এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের গোদাম একই মার্কেটের ৫ম তলায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই ৫ম তলায় সুমন ও ফেন্সী ষ্টোরের গুদামে হঠাৎ ধোয়া নির্গত হতে দেখে স্থানীয়রা। মালিক মহারাজ নাথ বাবুকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানান। তিনি তাৎক্ষনিক কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দিয়ে আগুন লাগার বিষয়টি জানান। ততক্ষণে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়। পরে কক্সবাজার ও রামু ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। তাদের সাথে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কর্মচারিরা সহায়তা করেন। প্রায় ২ ঘন্টা পর সকলের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার খবরে হাজারো উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভীড় করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন সদর মডেল থানা ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক টিম।
ছেউরী মার্কেটের মালিক মাখিমীর বড় ছেলে উসেন থোয়েন বাবু বলেন, মার্কেটের ৫ম তলায় হঠাৎ আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সবাই নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাতে ধারণা করা হচ্ছে।
আম্মাজান গার্মেন্টস টেক্সটাইলের মালিক মো. বাবুল জানান, সুমন ও ফেন্সীর ষ্টোরের পাশে তাঁর গোদাম। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনো তাঁর গোদামের কি অবস্থা তা জানা যায়নি।
কক্সবাজার বার্মিজ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মুছা কলিম উল্লাহ জানান, সুমন ষ্টোর হলো দামি নানা ব্র্যান্ডের অভিজাত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। আর ফেন্সী ষ্টোর প্রসিদ্ধ গার্মেন্টসের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। দুই প্রতিষ্ঠানের মালিক মহারাজ নাথ বাবু। তাদের গুদামে সব দামি মালামাল। ধারণা করা হচ্ছে আগুনে কমপক্ষে ২ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে।
সদর মডেল থানার এসআই মনছুর আলম ও শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম সেখানে ছুটে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীদের কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য পুলিশ কঠোরভাবে তদারকি করেন। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় এখনো কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার ডিফেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, মার্কেটের গোদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমাদের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। আমাদের সাথে যোগ হয় রামু ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট। মার্কেটের ৫ম তলায় আগুন লাগায় পানির পাইপ পৌঁছাতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। পরে মসজিদ ও পাশের ভবনের ছাদে উঠে প্রায় ২ ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের সুত্রপাত, ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়টি আমরা তদন্তের মাধ্যমে নিরূপণ করবো।