শাহ নিয়াজ:
আর্টিমিয়া হল এমন এক ধরনের জলজ ক্ষুদ্র জীব যা অধিক ঘনত্বের লবণ পানিতে চাষ করা হয় এবং সারাবিশ্বের মৎস্য ও চিংড়ি হ্যাচারিতে লার্ভার জীবিত খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে প্রতি বছর চিংড়ি হ্যাচারিতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে প্রায় ৪০ মেট্রিক টন আর্টিমিয়া আমদানি করা হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তাই লবণ খামারে সমন্বিত লবণ ও আর্টিমিয়া চাষের মাধ্যমে চাষিরা অধিক লাভবান হতে পারবে এবং দেশে আর্টিমিয়ার চাহিদা পূরনে আমদানি নির্ভরতা কমবে। এশিয়ার অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশে আর্টিমিয়া চাষ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে লবণ চাষিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মাছ চাষে অধিক উৎপাদন সম্ভবপর হবে। পুকুরে আর্টিমিয়া মজুদকরণ এবং ব্যবস্থাপনা শীর্ষক এক কর্মশালায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়িত, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় “আর্টিমিয়া ফর বাংলাদেশ ” প্রকল্পের অধীনে বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে এক দিন ব্যাপি “পুকুরে আর্টিমিয়া মজুদকরণ এবং ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উক্ত প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল অংশগ্রহনকারীদের আর্টিমিয়া মজুদকরণ এবং ব্যবস্থাপনার সঠিক ধারনা প্রদান করা। প্রশিক্ষণ কর্মশালার মূল বক্তা এবং প্রশিক্ষক ভিয়েতনামের কান্থো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এনগুইন ভ্যান হোয়া এবং বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. প্যাট্রিক সরগিলস অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লবণের মাঠে আর্টিমিয়া মজুদকরণ এবং ব্যবস্থপনার সঠিক পদ্ধতির পাশাপাশি অন্যান্য দেশে ব্যবহৃত আর্টিমিয়া মজুদকরণের পদ্ধতিসমূহ, আর্টিমিয়া সিস্ট ও বায়োমাসের সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের বিজ্ঞান ভিত্তিক টেকসই উপায় তুলে ধরেন।
কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য রাখেন উক্ত প্রকল্পের টিম লিডার ড. মুহাম্মদ মীজানুর রহমান। এই সময় তিনি “আর্টিমিয়া ফর বাংলাদেশ” প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলো তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি প্রশিক্ষনার্থীদের জন্য প্রফেসর হোয়া এবং প্রফেসর প্যাট্রিক সরগিলস এর প্রশিক্ষণকে বাংলায় অনুবাদ করেন।
উক্ত কর্মশালায় কক্সবাজার জেলার মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন, সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট বেসরকারী সংস্থার (নিরিবিলি ফিশারিজ লিমিটেড, সুশীলন) কর্মকর্তাবৃন্দ, গনমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ এবং “আর্টিমিয়া ফর বাংলাদেশ” প্রকল্পের সকল গবেষকগণ অংশগ্রহণ করেন।