মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:
পাঠজাতদ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, সংক্রমণ ও ভোক্তা অধিকার আইন অমান্য করায় বান্দরবানের লামা উপজেলায় ৮ ব্যবসায়ীকে ৭২ হাজার ২০০ টাকা অর্থদন্ড করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।

সোমবার দুপুরে উপজেলা শহরের বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহফুজা জেরিন এ অর্থদন্ডের আদেশ দেন। এ সময় অতিরিক্ত জরিমানা আদায় করার অভিযোগ তুলে তাৎক্ষনিক ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরের সব দোকান পাঠ বন্ধ করে দেন। ভবিষ্যতে অতিরিক্ত জরিমানা করা হবেনা; এমন আশ্বাসে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামালের মধ্যস্থতায় ২০ মিনিট পর বন্ধ দোকান পাঠ খুলে দেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্র জানায়, পরিবেশ দূষণ রোধ ও পাটের অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাল, সার, হলুদ, মরিচ ও আলুসহ ১৯টি পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সোমবার দুপুরে উপজেলা শহরের বিভিন্ন দোকানে অভিযানে নামে প্রশাসন। এ সময় পাটের বস্তার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তা ভর্তি চাউল মজুদ করায় পাঠজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনে জনতা রাইস মিলের মালিক শফিকুল ইসলামকে ৪০ হাজার, ব্যবসায়ী আবদুল মন্নানকে ৫ হাজার, নুরুল ইমলামকে ১০ হাজার টাকা, ওসমান গণিকে ১০ হাজার টাকা, মো. ইব্রাহিমকে ২ হাজার টাকা, শাহরিয়ার আলমকে ৩ হাজার টাকা, মাস্ক ব্যবহার না করায় সংক্রমন নিয়ন্ত্রণ আইনে আবুল খায়ের নামের এক ব্যক্তিকে ২০০ টাকা ও ফ্রিজে বাসি খাবার রাখার দায়ে ভোক্তা অধিকার আইনে কামাল উদ্দিনকে ২ হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা জেরিন। এ অভিযানে থানা পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

উল্লেখ্য, পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ২০১০ এর ১৪ ধারায় পরিস্কার বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত পণ্যে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার না করিয়া কৃত্রিম মোড়ক দ্বারা কোন পণ্য বা পণ্য সামগ্রী মোড়কজাতকরণ, বিক্রয়, বিতরণ বা সরবরাহ করলে বা করবার অনুমতি প্রদান করলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদন্ড বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল জানান, অতিরিক্ত জরিমানার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা দোকান পাঠ বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সাথে সমন্বয় করে বিষয়টি সমাধা করা হয়েছে।

আট ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন আইনে অর্থদন্ড করার সত্যতা নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা জেরিন বলেন, প্লাস্টিকের মোড়ক পচে না। এগুলো মাটিতে মিশে ফসল উৎপাদনকে ব্যহত করে। এগুলোর বর্জ্যেই দূষিত হয় পরিবেশ। পয়োঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও বিঘ্নিত হয়। তাই অভিযানের সময় অর্থদন্ডের পাশাপাশি প্লাস্টিকের বস্তার পরিবর্তে বাধ্যতামূলক পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশ ও সতর্ক প্রদান করা হয়েছে।