নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করেছিল উ ছেনু রাখাইন (১৩)। যার বার্থ রেজিস্ট্রেশন নং-২০০৯২২২৬৬০৮০৯৪৫৩৮। কিন্তু লটারিতে তার নাম এসেছে কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে মর্নিং শিফটে। ছেলেদের স্কুলে মেয়ের নাম আসায় সরকারি স্কুলে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছোট্ট মেয়েটির। এ অবস্থায় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েই তার ভর্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁর পরিবার।

জানা গেছে, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে ভর্তির আবেদন ফরম পূরণ করেন উ ছেনু রাখাইনের মা হ্লা হ্লা ওয়ান। কিন্তু গত ১১ জানুয়ারী মন্ত্রণালয়ের লটারিতে তার নাম চলে আসে ছেলেদের স্কুলের তালিকায় কক্সবাজার সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে। বালক স্কুলে বালিকার নাম আসায় বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় চলছে।

লটারিতে নাম আসায় উ ছেনু রাখাইনের মা হ্লা হ্লা ওয়ান তাঁর মেয়েকে বালক বিদ্যালয়েই ভর্তি করাতে চাইলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অপরাগতা জানান। অপরদিকে এ বিষয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও উ ছেনু রাখাইনের পরিবারকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ নিয়ে তাদের করার কিছু নেই। মেয়েটি এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না।

উ ছেনু রাখাইনের মা হ্লা হ্লা ওয়ান বলেন, আমি একটি কম্পিউটারের দোকান থেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করেছি। সেখানে কোনো ভুল ছিল না। আমার মেয়ের নামও লটারিতে উঠেছে। তাই মেয়েকে ভর্তি করাতে আমি জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাই।

বাংলাদেশ আদিবাসি ফোরাম কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মংথে হ্লা রাখাইন বলেন, কক্সবাজার সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ নানা কোটা রয়েছে। কিন্তু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য কোন কোটা নেই। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের সন্তানেরা কি সরকারি স্কুলে পড়ার সুযোগ পাবে না। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নাছির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। আবেদনকারী অভিভাবকের আরও সচেতন হওয়ার উচিত ছিল। বিষয়টি এখন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সমাধান করতে পারবেন।

কক্সবাজার সরকারি  উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন বলেন, আমাদের স্কুল ছেলেদের। এখানে মেয়েদের ভর্তির সুযোগ নেই। তাছাড়া এটি আমাদের কোনো ভুল না। আবেদনকারীর অভিভাবকরা ভুল করতে পারেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।