কালেরকন্ঠ : করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন। ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ক্লাস হলেও তা যথেষ্ট নয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে সরকারি দলের সদস্যরা এসব কথা বলেন।

গতকাল বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে আলোচনায় অংশ নেন বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সরকারি দলের সদস্য মোতাহের হোসেন, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার, আনোয়ার আবেদীন খান, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, আব্দুল আজিজ, এম এম শাহাজাদা ও খালেদা খানম এবং স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।

প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, করোনাকালে বিমান ও পর্যটন খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে করোনা মোকাবেলা করে আমরা এই খাত সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। বিমানবহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন উড়োজাহাজ। বিমানবন্দরগুলো আধুনিকায়নের কাজ চলছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কাজ চলছে। করোনার প্রভাবে যখন সারা বিশ্বে মন্দার সৃষ্টি হচ্ছে, তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে।

করোনাকালে শিক্ষা খাত দুর্বল হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহের হোসেন বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে এই সরকার অভূতপূর্ব পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশ ডিজিটাল হওয়ার কারণে অনলাইনে ক্লাস চলছে। ভার্চুয়াল ক্লাস হলেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা খুব বেশি উপকৃত হতে পারছে না। তাই যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।

তিনি আরো বলেন, তিস্তা নদী তাঁর এলাকার দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদীতে পানি নেই। ভারত থেকে যে পানি আসে তা খুব সামান্য। ওই পানিতে আবাদের কাজ হয় না। যত দ্রুত সম্ভব তিস্তা চুক্তি করা গেলে ওই অঞ্চলের মানুষ যথেষ্ট উপকৃত হবে।

সাবেক হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার বলেন, এখনো করোনার টিকা আসেনি। এরই মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

ডা. সামিল উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তিকে সহযোগিতা করে দেশকে অস্থির করার অপচেষ্টা করছে।

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বগুড়ায় বিমানবন্দর স্থাপনের দাবি জানান স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়া এবং মসজিদের ইমামদের ভাতা বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ বিল মওকুফের দাবি জানান।

সরকারি কাজেও পরিবেশবান্ধব ইট ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সরকারি দলের আনোয়ারুল আবেদিন খান। আরেক সদস্য আব্দুল আজিজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে এই করোনাকালেও দেশের অর্থনীতি সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।

সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য খালেদা খানম বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলো এই সরকার গ্রহণ করেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেলসহ সরকারের নেওয়া ২৪টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হলে দেশের অর্থনীতি বদলে যাবে।