মোঃ কাউছার ঊদ্দীন শরীফ, ঈদগাঁওঃ

কক্সবাজার সদরের বাণিজ্যিক এলাকা ঈদগাঁওতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবিটি গনদাবিতে পরিণত হয়েছে ।এলাকাবাসীসহ ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। কর্তৃপক্ষ এখানো ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপনের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ার ফলে সর্ব মহলে হতাশা বিরাজ করছে।

জানা যায়, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও বৃহৎ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। এ ঈদগাঁও বাস স্টেশন সহ বাজারে ব্যাংক,হাসপাতাল, বিভিন্ন মার্কেট,সপিংমলসহ প্রায় ১২ হাজারের ও অধিক ছোট বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অন্যদিকে পার্শবর্তী এলাকায় রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান।ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন,আলমাছিয়া ফাজিল মাদ্রাস,দারুল পাতা একাডেমি,জাহানারা বালিকা বিদ্যালয়, অরবিট মডেল স্কুল। সংলগ্ন ঈদগাঁও বাসষ্টেশন, অদুরে ঈদগাও পুলিশ তদন্তকেন্দ্র। এ সবকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন আবাসিক এলাকা। সব মিলে এটি একটি ব্যস্ততম উপ শহরে পরিনত হয়েছে।এ এলাকায় স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মানে কেউ কথা রাখেনি এমন অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসী সহ ব্যবসায়ীদের।এখানকার মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মানে বাধা কোথায়? এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে । কয়েক বছরের মধ্যে বেশকিছু প্রাণহানিসহ শতকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সত্বেও কেনো জনগুরুত্বপূর্ণ এমন একটি দাবির প্রতি কেউ নজর দিচ্ছে না? বৃহত্তর ঈদগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজার কিংবা বাসা বাড়ীতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রানহানিসহ বিপুল পরিমান মালামালের ক্ষতিসাধন হয়েই আসছে।সর্বশেষ ১০ জানুয়ারী কক্সবাজার সদর উপজেলা ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড চরপাড়া এলাকার আব্দু সালামের বাড়িতে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।এতে কমপক্ষে ২ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর পাঁচ দিন আগে ভারুয়াখালীতে অগ্নিকান্ডে ১০ বসতবাড়ি পুুুুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে পনের লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়। এক আগে ৪ ডিসেম্বর ঈদগাঁও বাস স্টেশনের কলেজ গেইট সংলগ্ন স্থানে গ্যাস সিলিন্ডার ক্রসফিলিং ডিপোতে আগুন লেগে ডিপোটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় দুই কর্মচারী নিহত হয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ৬০ লক্ষাধিক টাকা। স্থানীয় জনগনের এক ঘন্টা চেষ্টার পর আগুণ নিয়ন্ত্রনে আসে। এরই আগে ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে মোঃ আমিনের মালিকানাধীন আশা কলোনীতে এনজিও আশার ক্ষুদ্র ঋণ পরিচালনার অফিসে অগ্নিকান্ডে ১০-১৫টি ফ্লাটের পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান অনুমানিক ৩০ লক্ষাধিক টাকা। এর কয়েক মাস আগে ভোমরিয়া ঘোনা অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে দুই শিশু নিহত হয় এবং ৮ লক্ষ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়। অপরদিকে শাহ ফকির হাট বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে রাইসমিলসহ ৭টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অনুমানিক ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।এর আগে ঈদগাঁও বাজারে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়। অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু ভস্মিভূত হওয়ার পরে কক্সবাজার থেকে ফায়ার সার্ভিসে আসলেে ক্ষুব্ধ জনগন ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের উপর চড়াও হয়। বাজার ব্যবসায়ীরা জানান, এভাবে আর কত দিন। ঈদগাঁওতে ঘটেছে অসংখ্য অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান শত কোটি টাকা । কিন্তু অগ্নিকান্ড থেকে জনগনের জানমাল রক্ষার স্বার্থে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা আজও হয়নি। ঈদগাঁওতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন না হওয়ার প্রতিবাদে কক্সবাজার থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে অগ্নিকান্ডে এতো বিশাল ক্ষতি হতো না। এছাড়া প্রায়ই বিভিন্ন বসত বাড়িতে অগ্নিকান্ডের খবর পাওয়া যায়। শুধু মাত্র একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে অগ্নিকান্ডে ক্ষতির পরিমান অনেক কমে আসতো বলে মনে করেন সচেতন জনগন। ঈদগাঁওতে প্রায় ১০ লাখ জনসাধারণের জানমাল রক্ষার স্বার্থে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমাইয়া আক্তার সুইটির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমার বক্তব্য দিতে হয় নাকি বলে লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদের সাথে
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,যত ফায়ার সার্ভিস স্টেশন বেশি থাকে তথ ভালো, ঈদগাঁওতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন প্রয়োজন ছিল।আমি দেখে ঈদগাঁওতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের ব্যবস্থা করব বলে জানান।