সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁহ:

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জাধীন খুটাখালী বনবিট অফিসে আয়োজিত বন ও বন্যপ্রানী হাতি সুরক্ষায় জনসচেতনতা মুলক আলোচনা সভা ফাঁসিয়াখালী ও ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ জানুয়ারী) বিকেলে ফুলছড়ি রেঞ্জের আয়োজনে খুটাখালী বনবিট প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত জনসচেতনতা মুলক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম।

ডুলাহাজারা বনবিট কর্মকর্তা ইলিয়াছ হোসনের সঞ্চালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খুটাখালী বনবিট কর্মকর্তা ছৈয়দ মাহমুদুল করিম।

বিশেষ অতিথিদের মধ্য খুটাখালী ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীন, বাঁকখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা সরোয়ার আলম, ইউনিয়ন আ’লীগ সহ সভাপতি সাঈদ মু. শাহজালাল ও সাংবাদিক সেলিম উদ্দীন বক্তব্য রাখেন।

জনসচেতনতা মুলক সভায় প্রধান অতিথি ডিএফও তহিদুল ইসলাম বলেন, বন্য হাতির বর্তমান হোমরেঞ্জের আয়তন কমিয়ে আনতে হবে, যা বাস্তবায়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন।

বন্য হাতির হোমরেঞ্জ কমিয়ে আনা মানে বনের অভ্যন্তরে বন্য হাতির মূল আবাসস্থলগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করা।

যাতে করে বন্য হাতির চলাচল প্রাকৃতিকভাবে ওই সব এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

এছাড়াও বন্য হাতির গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থলগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোয় বন্য হাতির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য, নিরাপদ বাসস্থান ও প্রজননের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

বন্য হাতির মূল আবাসস্থলের উন্নয়ন করতে হলে হাতি অধ্যুষিত বনসংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী জনগণের জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে, যা প্রকৃত অর্থেই বেশ জটিল ও সময়সাধ্য বিষয়।

তিনি আরো বলেন, স্থানীয় জনগণের বননির্ভরতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দুই কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসরত জনগোষ্ঠীকে পর্যায়ক্রমে বয়সভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি কারিগরি শিক্ষা প্রোগ্রামের আওতায় আনার পাশাপাশি তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে।

সভাপতির সমাপনি বক্তব্যে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম বলেন, বন্য হাতি সৃষ্ট ফসলের ক্ষয়ক্ষতির প্রতি বনের ভেতরে বা বনসংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত জনগণের ধৈর্য ও সহনশীলতা বাড়ানো হবে।

বনসংলগ্ন গ্রামীণ সমাজে বসবাসকারী জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর মাধ্যমে বন্য হাতি সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির প্রতি স্থানীয় জনগণের ধৈর্য ও সহনশীলতার মাত্রা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

বন্য হাতির প্রতি হাতি অধ্যুষিত বন এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় জনগণের সহানুভূতি তৈরি করতে হলে সর্বপ্রথমে বন্য হাতির প্রতি যে ভীতি তাদের আছে তা দূর করতে হবে।

এ লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বন্য হাতির স্বভাব ও পরিবেশ সংরক্ষণে বন্য হাতির ভূমিকা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে পর্যায়ক্রমে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

সভায় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোছন, শামসুল আলম, বিভিন্ন বনবিটের কর্মকর্তা,বন প্রহরী, হেডম্যান,ভিলেজার ও সিপিজি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।