বিবিসি বাংলা:
নতুন নতুন সমরাস্ত্র তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আন সম্প্রতি তার জন্মদিন পালন করেছেন।
অস্ত্রের এই দীর্ঘ তালিকার মধ্যে রয়েছে: দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র যা আরো নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে, রকেট কিম্বা ক্ষেপণাস্ত্রে বহনযোগ্য বিশালাকৃতির বোমা বা ওয়ারহেড, গুপ্তচরবৃত্তির জন্য স্যাটেলাইট এবং পরমাণু শক্তি চালিত ডুবোজাহাজ ইত্যাদি ইত্যাদি।
বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ায় গত পাঁচ বছরের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে দেশটির এই সামরিক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়, যাকে পশ্চিমা বিশ্ব বড় ধরনের হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে।
একই সঙ্গে এই ঘোষণাকে দেখা হচ্ছে কিম জং-আনের ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবেও। কারণ এই পরিকল্পনার কথা এমন এক সময়ে ঘোষণা করা হলো যখন যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পরিবর্তন হতে যাচ্ছে এবং নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।
এর মধ্যে কিম জং-আন উত্তর কোরিয়ার শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সর্বোচ্চ সেক্রেটারি জেনারেল বা মহাসচিব পদেও উন্নীত হয়েছেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলের আগে যখন শোরগোল চলছে তখন মি. কিমের এই ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার বাইরে খুব একটা গুরুত্ব পায়নি।
এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার সামরিক পরিকল্পনাকে প্রতিহত করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রশাসনের যদি কোন পরিকল্পনা থাকে তাহলে তাদের উচিত হবে এবিষয়ে এখনই মনোযোগ দেওয়ার।
কেন এই ঘোষণা
“কোন সন্দেহ নেই যে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনকে লক্ষ্য করেই কিমের এই ঘোষণা। এবিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র-সক্ষমতার গুণগত অগ্রগতি ঘটবে যা যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর,” বলেন অঙ্কিত পাণ্ডা, যিনি ‘কিম জং-আন ও বোমা’ এই শিরোনামে উত্তর কোরিয়ার নেতার ওপর একটি বই লিখেছেন।
তিনি বলছেন, “জো বাইডেনের প্রশাসনের উচিত বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া।”
কিম জং-আন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে মোট তিনবার সাক্ষাৎ হয়েছে কিন্তু উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা ও দেশটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে তারা কোন সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেন নি।
এখন প্রশ্ন উঠেছে যে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কি এবিষয়ে কিছু করতে পারবেন এবং মি. কিমের দেওয়া হুমকিকে তার কি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত?
মি. পান্ডা বলেন, “আমি মনে করি নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের উচিত কিম জং-আনের ঘোষণাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা, এবং যত দ্রুত সম্ভব তার প্রশাসনের পরিষ্কার করা উচিত যে উত্তর কোরিয়ার সাথে সম্ভাব্য সমঝোতা থেকে তারা কোন লক্ষ্য অর্জন করতে চায়।”
“কিম যদি দেখেন যে এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত অবস্থানের কোন পরিবর্তন ঘটেনি তাহলে তিনি আরো পরীক্ষা ও অন্যান্য কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন,” বলেন তিনি।
ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেসে দলের কয়েক হাজার প্রতিনিধির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে কিম জং-আন যুক্তরাষ্ট্রকে তার দেশের “সবচেয়ে বড় শত্রু” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি এটাও বলেছেন যে তিনি “কূটনীতিকেও বাদ দিতে চান না।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং-আনের শীর্ষ বৈঠক হয়তো ব্যর্থ হয়েছে, তবে উত্তর কোরিয়ার শাসক দলের কংগ্রেসে এসব আলোচনাকে অত্যন্ত বড় করে দেখা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে “বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে এসব বৈঠক অনেক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।”
ফলে জো বাইডেন যদি এটাকে ব্যবহার করতে চান তাহলে তার এখনই নড়েচড়ে বসা উচিত।
তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যা নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির একজন গবেষক ডোয়েন কিম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকেই প্রথম এগিয়ে আসতে হবে এবং কোন সমঝোতা হলে তার জন্যেও একটা মূল্য দিতে হবে।
“যুক্তরাষ্ট্রের যে মূল্য দিতে হবে তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধ করা, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা থেকে বিরত থাকা। কোন শর্ত ছাড়াই ওয়াশিংটন এসব করবে না,” বলেন তিনি।
“আবার যদি আলাপ আলোচনা শুরু হয়, যেকোনো সমঝোতার জন্য কিমকেও উচ্চ মূল্য দিতে হবে, কারণ তিনি নিজেই শীতল যুদ্ধের স্টাইলে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে আসছেন যাতে উভয়পক্ষকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে এটি অর্থহীন কারণ যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের মধ্যে কোন সমতা নেই।”
শান্তি আলোচনা
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং-আন যখন হ্যানয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেছিলেন তখন তারা সমঝোতার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর সেটি আলোচনার টেবিলে নেই। আলোচনা হলেও মি. কিম এখন একেবারেই ভিন্ন ধরনের এক প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি হবেন।
কিম জং-আন যে ভাষণ দিয়েছেন সেখানে তিনি দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে প্রতিপক্ষের চেয়ে তারা ভাল অবস্থানে রয়েছেন। আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য তিনি কিছু বিষয় পুনরায় নির্ধারণ করে দিচ্ছেন- তাতে তিনি বর্তমান অস্ত্র ত্যাগ করার কথা বলছেন না, বরং বলছেন নতুন এবং আরো উন্নত অস্ত্র তৈরি করা থেকে নিজেকে থামানোর কথা।
আরো শত্রুতা?
কিম জং-আন যে তার পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার আরো বাড়াতে চান তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। তবে তিনি যেসব অস্ত্র তৈরি করতে চান সেগুলোর যে একটি দীর্ঘ ও বিস্তারিত তালিকা ঘোষণা করেছেন তা অনেককে বিস্মিত করেছে:
- দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র
- আরো উন্নত ও নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র
- হাইপারসনিক বা শব্দের চেয়েও কয়েক গুণ দ্রুত গতিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র
- শত্রুপক্ষের অবস্থান ও শক্তি চিহ্নিত করতে পারে এরকম সামরিক স্যাটেলাইট
- আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র
- চালকবিহীন নতুন আকাশযান
- রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রে বহনযোগ্য নতুন পরমাণু বোমা বা ওয়ারহেড
- কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র
যেকোনো নতুন অস্ত্র তৈরি করার পর সেটা পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং তখনই তৈরি হবে উত্তেজনার।
এর আগে উত্তর কোরিয়া দীর্ঘ পাল্লার তিনটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে তার জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
তবে দক্ষিণ কোরিয়া এধরনের উত্তেজনা ও বিপদজনক নীতি পরিহার করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।
কিন্তু কিম জং আন এখন সবকিছু ছুঁড়ে দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের দিকে এবং তাদের প্রতিক্রিয়ার জন্য তিনি অপেক্ষা করছেন।
মি. কিম তার ভাষণে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কতো দূর পর্যন্ত যেতে পারবে বলে তিনি আশা করছেন সেটাও তিনি তুলে ধরেছেন। তিনি চাইছেন সেটা যেন ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের কোন লক্ষ্যকেও আঘাত হানতে পারে।
এর অর্থ হচ্ছে এরকম কিছু হলে উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে সক্ষম হবে।
এর আগে ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়া হোয়াসং ১৫ নামে পরিচিত একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছিল। তারা তখন দাবি করেছিল যে পরমাণু বোমা নিয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও কোথাও পৌঁছাতে পারবে।
তবে এটা জানা যায়নি যে পরমাণু বোমাটি লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে আঘাত হানার জন্য যখন পুনরায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে তখন সেটিকে রক্ষা করার জন্য তাতে কোন ধরনের প্রযুক্তির প্রয়োজন আছে কীনা।
উত্তর কোরিয়ার নেতা এখন পরমাণু-চালিত ডুবোজাহাজেরও স্বপ্ন দেখছেন এবং বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন এটি তৈরিতে তাদের আরো অনেক সময় লাগবে।
তবে এটা ঠিক যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কিম জং-আন তার বর্তমান পরমাণু কর্মসূচিতে বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটিয়েছেন।
খাদ্য সঙ্কটের মধ্যেও বাজারে অভিযান
বলা হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ায় গত কয়েক দশকের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাহলে কিম জং-আন তার আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কীভাবে সংগ্রহ করবেন? তার এই ঘোষণা কি তাহলে ফাঁকা-বুলি? এই হুমকির কতোটা গুরুত্ব রয়েছে?
পাঁচ বছর আগে মি. কিম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার সেসব পরিকল্পনা এখন নষ্ট হয়ে গেছে।
পার্টি কংগ্রেসের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি সেই ব্যর্থতার কথা স্বীকারও করেছেন।
কিন্তু এর আগে তার পিতা কিম্বা দাদার মুখ থেকে কখনো “দুঃখিত” শব্দটি শোনা যায় নি। কিন্তু এখন মি. কিম দুঃখ প্রকাশ করছেন। এমনকি গত অক্টোবরে সামরিক কুচকাওয়াজের সময় জনগণের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তাকে কাঁদতেও দেখা গেছে।
প্রায় বছর-খানেক আগে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাতে প্রতিবেশী চীন থেকে সেদেশে করোনাভাইরাস ছড়াতে না পারে।
উত্তর কোরিয়া বলছে, এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের একটি সংক্রমণের ঘটনাও ঘটেনি। কিন্তু অসমর্থিত বহু রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যেই দেশটিতে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে।
সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার প্রভাব পড়েছে চীনের সাথে দেশটির বাণিজ্যের ওপরেও। বলা হচ্ছে এই বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ৮০% হ্রাস পেয়েছে।
এছাড়াও একের পর এক বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সব ফসল ও বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এনকে নিউজ ওয়েবসাইটে রাজধানী পিয়ংইয়াং-এর সুপারমার্কেটে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যদ্রব্য না থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার গুপ্তচর সংস্থার তথ্যানুসারে চিনির মতো সাধারণ সামগ্রীর মূল্যও বহু গুণে বেড়ে গেছে।
বিভিন্ন কূটনৈতিক সূত্র বলেছে সীমান্ত এলাকায় ওষুধ-পত্তরের মতো কিছু কিছু সামগ্রী স্তূপীকৃত হয়ে পড়ে আছে।
পরিস্থিতি খুব বেশি খারাপ হলে এসব সামগ্রী হয়তো কখনোই দেশের ভেতরে যাবে না। এছাড়াও তাদের ওপরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তো বহাল আছেই।
উত্তর কোরিয়া এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিশ্ব থেকে সবচেয়ে বেশি বিচ্ছিন্ন।
দেশের ভেতরেও বিভিন্ন জায়গায় অনানুষ্ঠানিক বাজারে অভিযান চালানোর খবর পাওয়া গেছে। বাড়তি কিছু অর্থ রোজগারের জন্য তারা এসব বাজার বসিয়ে ছিল।
পুঁজিবাদের এসব ছোট খাটো ইঙ্গিত এর আগে বছরের পর বছর ধরে মেনে নেওয়া হয়েছে কিন্তু দেশের অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে এসব অর্থও রাষ্ট্র নিয়ে নিতে উদ্যত।
কী করা যেতে পারে?
দক্ষিণ কোরিয়া বলছে বাইডেন প্রশাসন যে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী পিয়ংইয়াংকে সেই ইঙ্গিত দেওয়া হোক।
প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন নতুন বছরে দেওয়া তার ভাষণে আবারও বলেছেন যে তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে “যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে” সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী।
কিন্তু কিম জং-আন শান্তির সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি প্রায়শই বলে থাকেন এই আলোচনায় দক্ষিণ কোরিয়ার কোন ভূমিকা নেই।
দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে কোভিড মহামারি মোকাবেলায় টিকা ও ওষুধের ব্যাপারে যে সাহায্য কিম্বা সহযোগিতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেটাও কিম জং-আন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এনকে নিউজের একজন বিশ্লেষক জিওংমিন কিম বলেছেন, “এরকম পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়া তার আশা কমিয়ে দিয়েছে।”
“উত্তর কোরিয়ার ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেসের পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুনের কাছে এটা আরো পরিষ্কার হয়েছে যে দুই কোরিয়ার মধ্যে প্রতীকী ও ছোটখাটো সহযোগিতার ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার আগ্রহ নেই,” বলেন তিনি।
“তবে উত্তর কোরিয়া আলোচনার দরজা প্রেসিডেন্ট মুনের মুখের ওপর বন্ধ করে দেয়নি। তারা কিছু শর্ত দিয়েছে। তারা বলছে দেখি তোমরা কী ধরনের আচরণ করো। তার মানে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে না ঝুঁকে তাদেরকে উত্তর কোরিয়ার হাত ধরে চলতে হবে। মি. মুন এরকম করতে পারবেন না।”
জিয়ংমিন কিম বলেন, “উত্তর কোরিয়া যেহেতু কিছু শর্ত দিয়েছে এবং এখনও সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করেনি, তাই দক্ষিণ কোরিয়া তার আশা ধরে রাখতে পারে এবং শান্তির ব্যাপারে দেওয়া তাদের প্রস্তাব নিয়ে আরো অগ্রসর হতে পারে।”
তবে সমঝোতায় পৌঁছানোর সব রাস্তাতেই ওয়াশিংটনের সমর্থন প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের দিক থেকেও কিছু অগ্রাধিকার রয়েছে এবং এই তালিকায় আছে উত্তর কোরিয়াও।
তবে বেশিরভাগ বিশ্লেষক মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট যদি খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হন, উত্তর কোরিয়া তার পথেই অগ্রসর হবে, সম্ভবত তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে।
কিম জং-আন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রতি তার বার্তা হচ্ছে: “মি. বাইডেন, এখন আপনার পালা।”
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।