ধর্ম ডেস্ক:
নামাজ মুমিনের জীবনে কর্ম সম্পাদনের বাস্তব প্রশিক্ষণ। আল্লাহর আবশ্যক নির্দেশ হিসেবে নিজের নামাজ পড়া জরুরি বিষয়টি এমন নয়। বরং পরিবার পরিজনকে নামাজ পড়ানোর ব্যবস্থা করা প্র্যত্যেক দায়িত্ব। কেননা এ নামাজ শুধু ইবাদতেই সীমাবদ্ধ নয়, নামাজের মাধ্যমে অনেক নেয়ামত প্রাপ্তির বিষয় রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
‘আর (হে রাসুল!) আপনি আপনার পরিবারের লোকদের নামাজের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দেই আর তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্যই উত্তম পরিণাম।’ ( সুরা ত্বাহা : আয়াত ১৩২)

নামাজ মুমিন মুসলমানের জন্য সবচেয়ে বড় নেয়ামত। কারণ নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বান্দাকে অনেক গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاء وَالْمُنكَرِ وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مَا تَصْنَعُونَ
‘আর আপনি নামাজ প্রতিষ্ঠা করুন। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।’ (সুরা আনকাবুত : আয়াত ৪৫)

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ায় সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মর্যাদা লাভের পরও রাতে অনেক সময় নামাজে অতিবাহিত করেছেন। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়টি এভাবে ঘোষণা দিয়েছেন-
إِنَّ رَبَّكَ يَعْلَمُ أَنَّكَ تَقُومُ أَدْنَى مِن ثُلُثَيِ اللَّيْلِ وَنِصْفَهُ وَثُلُثَهُ وَطَائِفَةٌ مِّنَ الَّذِينَ مَعَكَ
‘নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি ইবাদতের জন্যে রাতের প্রায় দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধেক কিংবা তৃতীয়াংশ (নামাজে) দাঁড়িয়ে থাকে এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও আপনার সঙ্গে রয়েছে।’ (সুরা মুজাম্মিল : আয়াত ২০)

বিশ্বনবি ও সাহাবায়ে কেরামসহ যারা বেশি বেশি নামাজে সময় অতিবাহিত করেছেন। তাদের জীবনের প্রাপ্তিগুলো গণনা করে কিংবা পরিমাপ করা সম্ভব হবে না। নামাজের নেয়ামত তারা যথাযথ পেয়েছিলেন।

মুমিন মুসলমান নামাজের মাধ্যমেই জীবনে পরিপূর্ণ সফলতা পেতে পারে। নামাজই তাকে সফল মুমিন হিসেবে তৈরি করে। যেভাবে সফলতা পেয়েছেন স্বয়ং বিশ্বনবি এবং তার সাহাবায়ে কেরাম।

তাই মুসলিম উম্মাহর উচিত, যথাযথভাবে নামাজ পড়া। নিজের ও পরিবারের সবাইকে নামাজ প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রাখা। দুনিয়া ও পরকালের জীবনে নামাজের শিক্ষা ও উপকারিতা লাভ করা।

জীবনের সফলতায় নামাজের শিক্ষা ও উপকারিতা
– নামাজের মাধ্যমে মানুষ পায় আনুগত্য ও নির্ভরতা শিক্ষা।
– নেতার অধীনে চলার শিক্ষা।
– সময়ের প্রতি সচেতনাবোধ।
– সামাজিক সাম্য ও সম্প্রীতি স্থাপনের শিক্ষা।
– ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের বাস্তবতা।
– দৈহিক, মানসিক, আত্মিক ও নৈতিক বিশুদ্ধতা লাভ।
– কাজের মনোযোগ ও একাগ্রতার প্রশিক্ষণ।
– পাপবর্জন এবং পুণ্যার্জনের পথে চলে মানুষ।
সর্বোপরি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ এবং তার নিদর্শন লাভের মাধ্যমে সামাজিক সব অন্যায় কাজ পরিহার ও শান্তি ও প্রশান্তির আবেদন থাকে এ নামাজে।

আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে নিজের, পরিবারের সম্ভব্য ক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্রে নামাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।