ইমাম খাইর, সিবিএনঃ
দেশের লবণশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে শিগগির উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পসচিব কেএম আলী আজম।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লবণচাষিদের প্রতি সহনশীল। তিনি সরাসরি লবণ চাষিদের খোঁজ নেন। লবণশিল্প ও চাষিদের বাঁচাতে কাজ করছে সরকার।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারে লবণশিল্প সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় কেএম আলী আজম এসব কথা বলেন।

শিল্পসচিব বলেন, সরকারিভাবে ১ লক্ষ মেট্রিকটন লবণের বাফার মজুদ করার পরিকল্পনা আছে। সেই লক্ষ্য স্টেকহোল্ডার সাথে বসব। পারমিশন ছাড়া কিভাবে আমদানি করে তা দেখা হবে। অনেক তদবির, চাপাচাপির পরও মাঠ জরিপ নিয়ে গত কুরবানির মৌসুমে লবণ আমদানির অনুমোদন দেয়া হয় নি। তাই কিছুটা হলেও বাজারে লবণের দাম ছিল।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে সভায় শিল্পসচিব বলেন, গ্লোবালহাটে বিচ্ছিন্ন অর্থনীতির পলিসি তৈরি করতে পারি না। নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সঠিক তথ্য দিতে হবে। মাঠের প্রকৃত চিত্র নিয়ে সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, আমরা লবণশিল্পে জন্য পলিসি সাপোর্ট দিতে চাই। এই মাসের মধ্যে বসব। সবার মতামত নেব। দেশের লবণকে শক্তিশালী অবস্থানে নেয়া হবে।

কক্সবাজারের লবণশিল্প বাঁচাতে কাজ করা হবে। সরকারও সেটা নিয়ে ভাবছে। সবার সম্মিলিতভাবে দেশের সামগ্রিক উন্নতি সমৃদ্ধি আসবে।

কক্সবাজারের লবণচাষিদের উদ্দেশ্যে শিল্পসচিব কেএম আলী আজম বলেন, আপনাদের দেয়া লবণজমিতে সরকারের উন্নয়ন কাজ চলছে। লবণচাষি ও মিল মালিকদেন সমন্বিত প্রস্তাবনা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।

জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোশতাক হাসান, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আমিন আল পারভেজ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী।

বিসিক কক্সবাজারের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় লবণমিল মালিকদের পক্ষে বক্তব্য দেন- মহেশখালী পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া, বাংলাদেশ লবণমিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির, বাংলাদেশ লবণচাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল, ইসলামপুর লবণমিল মালিক সমিতির সভাপতি শামসুল আলম আজাদ, বাংলাদেশ লবণমিল মালিক সমিতির সাবেক সহসভাপতি নুরুল আবছার হেলালী, মিলার ফরিদুল ইসলাম খান, কাজি আবুল মাসুদ, শরীফ বাদশা, আবদুল গফুর প্রমুখ।

অসাধু ব্যবসায়ীরা শিল্প লবণের আড়ালে দেদারছে সোডিয়াম সালফেট বাজারজাত করছে। যে কারণে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশীয় শিল্প বিরোধী চক্রের হাতে ধ্বংস হচ্ছে লবণখাত।

দেশের বিরাট একটি শিল্পকে বাঁচাতে লবণসাদৃশ্য বস্তু সম্পূর্ণ বন্ধ অথবা চেপ্টার ২৮, ২৯ এর আওতায় যে সমস্ত লবণসাদৃশ্য বস্তু আমদানি করা হয় সে সব বস্তু সিডি (কাস্টম ডিউটি) ৩০ শতাংশ এবং এসডি (সাপ্লিমেন্টারী ডিউটি) ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ লবণমিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির।

সভায় লবণের জাতীয় চাহিদা নির্ণয়, চাষিদের অর্থঋণ প্রদান, লবণের বাজারমূল্য নির্ধারণ, কম দামে পলিথিন সরবরাহ, মনিটরিং সেল এবং লবণবোর্ড গঠনের দাবি জানিয়েছে লবণমিল মালিক ও চাষিরা।