ছোটন কান্তি নাথ :
বান্দরবানের লামা ও কক্সবাজারের চকরিয়ার পাঁচটি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে চলমান ইয়াংছা-মানিকপুর-কাকারা-শান্তিবাজার সড়ক নির্মাণকাজ স্থবির হয়ে রয়েছে দীর্ঘ ৬ মাসের বেশিসময় ধরে। সড়কটির দুই পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সরাতে না পারায় এই স্থবিরতা বিরাজ করছিল। এতে সংকুচিত ও খানাখন্দে ভরপূর সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচলে যথেষ্ট দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পাঁচটি ইউনিয়নের অন্তত দুই লক্ষাধিক মানুষকে। এই অবস্থায় সড়কটির দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা সরানোর কাজে নিজেই নেমে পড়েছেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। বুলডোজার দিয়ে তিনি নিজেই উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। একইসাথে যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদেরকেও যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন এমপি জাফর আলমের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে। এ পর্যন্ত অন্তত ১০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদ, স্কুলসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে।
জানা গেছে, ৫৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরে এবং সেই টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রায় ১৪ মাস আগে সড়কটির নির্মাণকাজের শুভ উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমের জোর প্রচেষ্টা ছিল সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পেছনে। কিন্তু সড়কটি নির্দিষ্ট ১৮ ফুট প্রস্থ করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতাও ছিল যথেষ্ট। কারণ সড়কটির দুই পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা সরানো নিয়ে সড়কটি নির্মাণকাজে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
অবশেষে সেই প্রতিবন্ধকতা দূর করতে মাঠে নেমেছেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলম। তিনি গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার সশরীরে উপস্থিত থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বুলডোজার দিয়েই সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। এ সময় যেসব স্থাপনার ক্ষতি হচ্ছে সেসব পরিবারকে এমপি জাফর আলমের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হচ্ছে। এতে চলতি শুষ্ক মৌসুমেই সড়কটির নির্মাণকাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হবে বলে আশা ভুক্তভোগী দুই লক্ষাধিক মানুষের।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটির বেশিরভাগ অংশে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল ও বরইতলী ইউনিয়নে। তন্মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বেগ পেতে হয়েছে কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল অংশে। অবশেষে এমপি জাফর আলমের সহায়তায় সেই অবৈধ স্থাপনা সরানোর কাজ চলমান রয়েছে গত দুইদিন ধরে।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত ওসমান বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে না পারায় ৬ মাসের বেশিসময় ধরে স্থবির রয়েছে সড়কটির নির্মাণকাজ। এই অবস্থায় আমাদের মাননীয় এমপি জাফর আলমের নেতৃত্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণেরও ব্যবস্থা করেছেন এমপির ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে। এতে আশা করা যাচ্ছে, চলতি শুষ্কমৌসুমে সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে পারবে ঠিকাদার। যদিওবা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আরএবি-আরসি প্রাইভেট লিমিটেডের যথেষ্ট গাফেলতি ছিল শুরু থেকে সড়কটির নির্মাণকাজে।’
এমপির ব্যক্তিগত সহকারী আমিন চৌধুরী বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি নিয়ে জনগণের অভিযোগের শেষ ছিল না। তাই এমপি সশরীরে গত দুইদিন ধরে উপস্থিত থেকে বুলডোজার দিয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন অবৈধ স্থাপনা। আর যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদেরকে যথাযথ ক্ষতিপূরণও দিচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে। ইতোমধ্যে মসজিদ, স্কুলসহ অসংখ্য পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। যাতে চলতি শুষ্ক মৌসুমে সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।’
এ ব্যাপারে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা সরাতে সওজ এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ব্যর্থ হওয়ার পর আমি নিজেই উদ্যোগ নিয়েছি সড়কের দুই পাশের স্থাপনাগুলো সরিয়ে নিতে। এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণও দিচ্ছি। যাতে চলতি শুষ্ক মৌসুমে সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয় এবং জনদুর্ভোগ লাঘব করা যায়। জনগুরুত্বপূর্ণ যে কোন উদ্যোগ আমার পক্ষ থেকে অব্যাহত থাকবে, কারণ আমি জনগণের জন্যই রাজনীতি করি।’