নিজস্ব প্রতিবেদক:

মুক্তিযোদ্ধা কন্যা, স্কুল শিক্ষিকা শামীমা আকতার অভিযোগ তুলেছেন, তার মালিকানাধীন ২ শতক জমি দখলে নিতে ও চরিত্রহননের উদ্দেশ্যে প্রাক্তন স্বামীসহ আইনজীবী দম্পতি মিলে অপপ্রচার শুরু করেছে। রোববার বিকেলে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ উত্থাপন করেন। ’

সংবাদ সম্মেলনে শামীমা আকতার বলেন, ‘গত ২৯ ডিসেম্বর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমাকে জড়িয়ে সংবাদের নামে যে কলংক দেওয়া হয়েছে তাতে একজন মা হিসেবে, একজন শিক্ষিকা হিসেবে বেঁচে থাকা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্যাতিত কোন নারীর নাম, ঠিকানা প্রকাশের ক্ষেত্রে আইনের সুষ্পষ্ট বিধিনিষেধ থাকা সত্তে¡ও আমার পারিবারিক ছবিসহ মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সামাজিকভাবে আমার যে মর্যাদাহানি হয়েছে, যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরনীয়। এটি আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। দেশে এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকতে কেন আমাকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ?’

সাংবাদিকদের সামনে কথা বলার এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শামীমা। তিনি বলেন, সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, যে তারিখে আমার বিরুদ্ধে এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে সে তারিখে আমার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোন আদালতে গ্রেফতারী পরোয়ানা ছিল না, এখনও নেই। মূল ঘটনা হলো, কক্সবাজার শহরতলীর হাজি পাড়ায় আমি ২ শতক জমির মালিক। সেখানে প্রাক্তন স্বামী রশিদ আহমদ আরও ২ শতক জমির মালিক। এই চার শতক জমির মালিক ছিলেন সাবেক প্রাইমারী শিক্ষক। যিনি বর্তমানে আইনজীবী এবং তার বর্তমান স্ত্রীও আইনজীবী। এই আইনজীবী দম্পত্তি জমির লোভে আমার প্রাক্তন স্বামীকে ব্যবহার করে ন্যাক্কারজক ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। আমার প্রাক্তন স্বামী রশিদ আহমদকে তালাক দেওয়ার কারণ সে অবিবাহিত হিসেবে আমাকে বিয়ে করলেও পরে জানতে পারি তার স্ত্রী ও ৩ সন্তান থাকা অবস্থায় তথ্য গোপন করে আমাকে বিয়ে করেছে। আমার বেতনের টাকা-পয়সা আত্মাসাত করেছে সে। বিয়ের পর আমি দেখতে পাই, সে মাদক সেবী, মাদক ব্যবসায়ী এবং নারী লোভী। তার এ অপকর্ম সহ্য করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে সে ওই মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে আসছে।

শামীমা বলেন, ‘আমার সাবেক স্বামী রশিদ আহমদ বর্তমান থাকা অবস্থায় তার ভাগিনা জাকির হোসেনকে বিয়ের বিষয়টিও সত্য নয়। তাকে যথাযত আইনী প্রক্রিয়ায় তালাক দেওয়ার পরই আমি বিয়ে করি। জাকির নাকি সম্পর্কে তার ভাগিনা হয়। এতে আইনগত, শরীয়তগত কোনা বাধা না থাকলেও নৈতিক দায়িত্ব থেকে আমি জাকিরের বন্ধন থেকেও আলাদা হয়ে যাই। তারা মামা-ভাগিনা মিলে আমার সর্বনাশ করলেও এখন উল্টো আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, অশ্লীল ছবি প্রদর্শনের হুমকি দেওয়ায় গত ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর আমি তার বিরুদ্ধে রামু থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করি। এরপর গত ২০১৯ সালের ৫ মার্চ মোহরানা দাবী কওে রামু পারিবারিক আদালতে মামলা করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে চট্টগ্রামের বাঁশখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে আমার বিরুদ্ধে টাকাপয়সা আত্মসাতের অভিযোগে নালিশী দরখাস্ত দেয়। স্ত্রী ও সন্তান থাকা সত্তে¡ও তথ্য গোপন করে বিয়ে করায় গত ২০১৯ সালের ২০ মার্চ রামু জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করি আমি। াপোষের শর্তে মামলাগুলোতে জামিন পাওয়ার পর আমার জমি-জমা দখল ও মানইজ্জ্ত ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াসের অংশ হিসেবে ভুঁয়া অভিযোগ দিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। এর ধারবাহিকতায় গত ১০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পূর্বের মামলার তথ্য গোপন করে আরও একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় গত ২৯ ডিসেম্বর আমি জামিন পাই। তারপরও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির মিথ্যা খবর প্রকাশ করা হয়। আমাকে কোন প্রকার জিজ্ঞাসা না করে এ ধরনের প্রচারনার একেবারেই অনভিপ্রেত, মানহানিকর ও নিন্দনীয়।’