সিবিএন ডেস্ক:
দেশের ৩১৫টি বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্স ভবিষ্যতে উঠিয়ে দেবে সরকার। এসব কলেজের ডিগ্রি পাস কোর্সের পাশাপাশি কারিগরিসহ বিভিন্ন কোর্স খোলা হবে। এই প্রক্রিয়ায় যেতে কাজ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বেসরকারি অনার্স মাস্টার্স থাকবে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আমরা আর সনদধারী বেকার আমরা তৈরি করতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছেন। কাজেই যারা অনার্স-মাস্টার্স করবেন তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই করবেন। ডিগ্রি পাস কোর্সের পাশাপাশি বিভিন্ন শর্ট কোর্স করতে পারি।’
অনার্স কোর্স না রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি অনার্স কলেজে লেখাপড়া করে চাকরি পান না। প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে বিরাট একটা ব্যবধান তৈরি হয়ে যায়, যারা এই প্রক্রিয়ার (বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স) মধ্যদিয়ে যান তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। অভিভাবকদের জন্যেই এটি সুখকর নয়। সন্তানকে পড়ালেন, তাদের একটি চাকরির প্রত্যাশা থাকে তাদের চাকরি হয় না। কোনও কিছু করবে সেটির প্রয়োজনীয় যোগ্যতা তারা অর্জন করতে পারে না। সেইসব নানা সমস্যা সমাধারে উদ্যোগ আমরা নিচ্ছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলজের ডিগ্রি স্তরের শিক্ষকরা সরকারি বেতন-ভাতার অংশ পেলেও অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা সে সুবিধা পান না। বিগত ২৮ বছর ধরে বঞ্চনার শেষ সমাধান হিসেবে জনবল কাঠামোতে পদ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
ডিগ্রিস্তর পর্যন্ত পরিচালিত এমপিওভুক্ত কলেজগুলোয় ১৯৯৩ সালে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের অনুমোদন দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিধিবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত স্কেলে শিক্ষকদের মূল বেতন দেওয়ার শর্তে অনার্স-মাস্টার্সের বিষয় অনুমোদন নেয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কলেজের টিউশন ফি থেকে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার নির্দেশনা দেয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এই কারণে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকের পদ কলেজগুলোর জনবল কাঠামোয় স্থান পায়নি। ফলে সরকারি বিধিবিধানের আলোকে এমপিওভুক্ত হওয়ার সুযোগ বঞ্চিত হন তারা। আর বিগত ২৮ বছরেও এই সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষ ৩১৫টি কলেজের প্রায় চার হাজারের বেশি শিক্ষকের পক্ষে অনার্স-মাস্টার্স স্তরে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা সম্প্রতি সরকারের কাছে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষকদের দুর্দশা ঘোচানোর প্রস্তাব করেছেন।
অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ কী জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছি। এতে হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু আমরা যদি এমপিওভুক্তিতে এক ধরনের সিদ্ধান্ত নেই, আবার যদি ভিন্ন নতুন সিস্টেম চালু করি তখন সমন্বয়টা আরও বেশি সমস্যা হয়ে যাবে। সে জন্যই আরও বিচার বিশ্লেষণ প্রয়োজন রয়েছে।’

-বাংলাট্রিবিউন