বিদেশ ডেস্ক:
আফগানিস্তানে নিজ বাড়ির সামনে খুন হয়েছেন সমাজকর্মী ফ্রেশতা কোহিস্তানি এবং তার এক ভাই। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ ওই ঘটনা ঘটে। এখনও পর্যন্ত কোনও সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেনি।

কাপিসা প্রদেশের কোহিস্তান জেলার হেস-ই-আওয়াল এলাকায় দানহো গ্রামে বসবাস ছিল ফ্রেশতার। দিন কয়েক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রেশতা জানান, তিনি খুনের হুমকি পাচ্ছেন। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছেন। তার পরেই এই ঘটনা।

বৃহস্পতিবার মোটরবাইকে চেপে ফ্রেশতার সামনে হাজির হয় অজ্ঞাত দুষ্কৃতীরা। তাকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। মৃত্যু হয় ফ্রেশতার। গুলিবিদ্ধ হন তার এক ভাইও। জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারও মৃত্যু হয়।

নারী অধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিলেন ২৯ বছরের ফ্রেশতা। গতবছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবদুল্লা আবদুল্লার হয়ে প্রচারেও ছিলেন তাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকার পাশাপাশি, নারী অধিকার নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে কাবুল-সহ দেশের নানা জায়গায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন তিনি।

ফ্রেশতার খুনের বিষয়টি নিয়ে গোয়েন্দারা তদন্ত শুরু করেছেন। আবদুল্লার দাবি, জঙ্গিরাই ফ্রেশতাকে গুলি করে মেরেছে। আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে আবদুল্লার। এই হত্যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

আফগান সরকার এবং তালেবানের মধ্যে শান্তি বৈঠক চলাকালীন সম্প্রতি সে দেশে রাজনীতিক, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মীদের উপর হামলা এবং খুনের ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়ে গেছে। ফ্রেশতার উপর যে ভাবে হামলা চালানো হয়, অবিকল একই ধাঁচে গুলি করে খুন করা হয়েছে বহু বিশিষ্ট মানুষকে। বুধবার কাবুলে প্রকাশ্য দিনের আলোয় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন মহম্মদ ইউসুফ রশিদ নামের এক ব্যক্তি। নির্বাচনী দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তকারী একটি সংগঠন চালাতেন তিনি।

এ সপ্তাহেই গজনিতে মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন রহমাতুল্লা নেকজাদ নামের এক সাংবাদিক। এ বছর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত মোট ৭ জন খুন হয়েছেন আফগানিস্তানে। স্বাধীন বালুচিস্তানের দাবিতে সরব বিশিষ্ট সমাজকর্মী করিমা বালোচের সাম্প্রতিক মৃত্যু ঘিরেও রহস্য দানা বাঁধছে।