আজিজুল হক রানা:
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম পশু হাসপাতালে চিকিৎসক নেই দীর্ঘ ২ যুগের বেশী সময় ধরে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালটি জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকলেও এ ব্যাপারে কারো মাথাব্যাথা নেই। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধিনে সরকারী অর্থায়নে সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম গোলাম সোবাহান সিকদার গং এর দানকৃত ৪০ শতক জায়গার উপর হাসপাতালটি নির্মিত হয়। তখন থেকে একজন ডাক্তার নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে ছাউনি উড়ে গিয়ে হাসপাতালের সরঞ্জামাদি নষ্ট হয়ে যায়। তখন থেকে অযত্ন অবহেলায় ছিল হাসপাতালটি।
২০১২ সালে হাসপাতালটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমন্ডার আলহাজ্ব রাজামিয়ার তত্বাবধানে হাসপাতালটি সংস্কার করা হয়। তবে, এখনো চিকিৎসক নিয়োগ করা হয় নি।
মিয়ানমারের সীমান্তঘেষা ঘুমধুমের ত্রিশ হাজার পাহাড়ি বাঙ্গালী জনগোষ্টির একমাত্র পশু হাসপাতালটি বন্ধ থাকায় বিভিন্ন সময় রোগাক্রান্ত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নটি কৃষি প্রধান এলাকা। মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম গরু, মহিশ, ছাগল, হাস, মুরগী পালন।
গত ৩ বছর পূর্বে মুরগীর দুই-শতাধিক বাণিজ্যক খামার থাকলে ও বর্তমানে মাত্র ৫০টি খামার রয়েছে।
পোল্ট্রি খামার ব্যাবসায়ী সালা উদ্দিন, জাফর আলম, মামুনুর রশিদ, করিম, ইমাম হোছাইনসহ আরো অনেকের অভিযোগ, পশু চিকিৎসক না থাকায় তারা গবাদি পশু পালন নিয়ে কষ্টে আছেন। বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
উপজেলায় চিকিৎসক ও পশু সম্পদ কর্মকর্তা থাকলে ও দুরত্ব বেশী হওয়া চিকিৎসা সেবা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘুমধুম ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, এলাকায় পশু রোগের পার্দুভাব দেখে ১৯৮৬ সালে হাসপাতাল স্থাপনের জন্য আমাদের পিতা-চাচারা যৌথভাবে ৪০ শতক জমি দান করেছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন হাসপাতালটি বন্ধ থাকায় আমরা পশু রোগের ক্ষেত্রে না সমস্যায় পতিত হচ্ছি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব রাজা মিয়া বলেন, এই এলাকায় কোন পশু রোগে আক্রান্ত হলে ছয় কিলোমিটার দুরে পাশ্ববর্তী উখিয়া উপজেলা পশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় আমাদের এলাকার ত্রিশ হাজার জনগোষ্টির জন্য কোন পশু ডাক্তার না থাকায় রোগে আক্রান্ত পশু মৃত্যুর হার দিন দিন বাড়ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পশু সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুকান্ত কুমার সেন বলেন, পুরো নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় মাত্র মাত্র ৩জন পশু চিকিৎসক রয়েছে তাই আমরা ইউনিয়ন ভিত্তিক পশু চিকিৎসক সংকট রয়েছি। তবুও পশু রোগের ক্ষেত্রে জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন পাঠাব।