অনলাইন ডেস্ক : একাত্তরের গণহত্যা, নৃশংসতা ও ঘৃণ্য ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান সরকার। তবে দেশটির পক্ষ থেকে যেন আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া হয়, সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যহত রাখা হয়েছে।

গেল ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তান যে নৃশংসতা চালিয়েছিল তা ভুলে যেতে পারে না বাংলাদেশ। একাত্তরের ঘটনাগুলো ভোলা যায় না। সেই ক্ষত চিরদিন রয়ে যাবে।’

ওই সাক্ষাতের সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেন হাইকমিশনার। শেখ হাসিনাও হাইকমিশনারের মাধ্যমে ইমরান খানকে শুভেচ্ছা জানান।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন সম্পর্কে জানতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী তাদের পরামর্শ দিয়েছেন। বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক ফোরামগুলোর নিষ্ক্রিয়তার উল্লেখ করে পাকিস্তানের হাইকমিশনার দুই দেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনস্যুলেশন সক্রিয় করতে শেখ হাসিনার সহযোগিতাও চান।

সরকারপ্রধান বলেন, নিয়মিত কাজ চালিয়ে যাওয়ায় এখানে কোনও বাধা নেই। ইমরান আহমেদ বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও রকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়া দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে চায়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আঞ্চলিক সহযোগিতায় বিশ্বাস করেন। বিশ্ব অঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

কূটনৈতিক পরিস্থিতি বলছে, পাকিস্তান যে কোনও মূল্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটাতে চায়। বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনের গল্প জানতে চায়। এজন্য বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাকিস্তান হাইকমিশনার সাক্ষাৎ করেছেন।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান দু’দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক চায়। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্ষমা না চাইলে বৈঠকে বাংলাদেশ রাজি হবে না। সেই প্রস্তাবেও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটি। ধারণা করা হচ্ছে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে পারে।
-বিডি জার্নাল