মুহিব উল্লাহ মুহিব :
কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলাধীন গর্জনিয়া ইউনিয়নের থিমছড়ি গ্রামের মীর আহমদ ও মমতাজ বেগমের ছেলে লোকমান হাকিম সদ্য প্রকাশিত ১৩ তম বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষায় সহকারী জজ হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

পরিবারের ৫ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৩ সালে জিপিএ ৫ নিয়ে এইচএসসি পাস করার পর ভর্তি হয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ২০১৩-১৪ সেশনে (২২ তম ব্যাচ)। উক্ত বিভাগ থেকে ১ম শ্রেণিতে এলএল.বি. (অনার্স) ও ১ম শ্রেণিতে এলএল.এম. সম্পন্ন করেন যথাক্রমে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে।

তাঁর বড় ভাই অধ্যক্ষ ওবায়দুল হাকিম বলেন, “লোকমান নিজ মেধা ও পরিশ্রম গুণে আজকে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তার সাফল্যে আমি খুবই আনন্দিত। সে আমাদের পরিবার ও লোকালিটির জন্য সম্মান বয়ে এনেছে। তাকে নিয়ে আমাদের পরিবার ও এলাকাবাসী গর্বিত। এখন শুধু একটাই আশা- সে দেশের ও মানুষের কল্যাণের জন্য নিজের সবটুকু দিয়ে কাজ করুক।”

এমন গৌরবময় সাফল্য নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান বলেন, “আমার ছাত্র লোকমান খুবই আদর্শবান মানুষ। ছাত্রজীবনে সে খুবই অমায়িক, ভদ্র ও সুশৃঙ্খল ছিল। তার মতো মেধাবী ছাত্রের পক্ষে জজের মতো বড় পদে যাওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। সে তার যোগ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারায় আমি খুব খুশি হয়েছি। প্রাতিষ্ঠানিক ও নৈতিক শিক্ষা কাজে লাগিয়ে সে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজেকে উজাড় করে দিবে এমনটাই প্রত্যাশা।”

সুপারিশপ্রাপ্ত সহকারী জজ লোকমান হাকিম বলেন, “আল্লাহর অশেষ রহমতে আজকে আমি এতদূর আসতে পেরেছি। মা-বাবা না থাকা সত্ত্বেও এই দীর্ঘ পথচলায় আমার ভাই-বোনেরা আমাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। বড় ভাই ওবায়দুল হাকিমের ঋণ কখনো শোধ করার মতো নয়। এছাড়া আরাফাত ভাইয়ার সঠিক দিকনির্দেশনা না পেলে এই কঠিন পথ পাড়ি দেয়া হয়তো সম্ভব হতোনা। আমার জজ হওয়ার পেছনে অসংখ্য মানুষের দোয়া ও ভালবাসা আছে, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ করে আমার পরিবার, শ্রদ্ধেয় স্যার-ম্যাম, বন্ধু-বান্ধবী, সিনিয়র-জুনিয়র সহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি আমি অনেক কৃতজ্ঞ। সবাই দোয়া করবেন যেন প্রিয় দেশের জন্য ও বিচার বিভাগের জন্য সর্বোচ্চ অবদান রাখতে পারি। সর্বোপরি যেন একজন ন্যায়বিচারক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারি।”