সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :

একশনএইডের আয়োজনে ১১ ডিসেম্বর কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হলো নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক (আলোচনা সভা) সেমিনার। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের একটি হোটেলে এর আয়োজন করা হয়। “ভায়োলেন্স এগেইস্ট উইমেন-ইটস এ ম্যান ইস্যু” শিরোনামে আয়োজিত সেমিনারে অংশ নিয়ে নারীদের ওপর পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে করণীয় নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিচার চেয়েও কোন প্রতিকার না পাওয়া এক নারীর কাহিনী নিয়ে নির্মিত ভিডিওচিত্র প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে শুরু আলোচনা। এতে অংশ নিয়ে কক্সবাজার জজকোর্টের আইনজীবী সাকী এ কাউছার বলেন, সহিংসতা হলো আমাদের সমাজে নারীকে দমিয়ে রাখার অন্যতম হাতিয়ার। আর এ সহিংসতায় জন্য পুরুষরাই দায়ী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, আমাদের সমাজের বেশিরভাগ কর্তৃত্বস্থানীয় পদ দখল করে আছে পুরুষরা। আবার নারীর প্রতি সহিংসতার জন্যও পুরুষই দায়ী। তাই এ সমস্যার প্রতিকারে পুরুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।

এসময় একশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, সমাজের কিছু সংখ্যক পুরুষ নারীর প্রতি সহিংসতার সাথে বলে বাকীকে এর জন্য দায়ী করার সুযোগ নেই। তাই, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ করে নারী-পুরুষের সহ-অবস্থান নিশ্চিত করতে পরিবার তথা সমাজের প্রতিটি পুরুষকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সেইসাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে করণীয় নানা বিষয় তুলে ধরেন ফারাহ কবির।

আলোচনায় অংশ নিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, ক্যাম্পে ছোটখাট বিষয় নিয়ে নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করেন রোহিঙ্গা পুরুষরা। তাদের দীর্ঘদিনের এ সংস্কৃতি রাতারাতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে, সহিংসতা প্রতিরোধে উন্নয়ন সংস্থাসহ সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে বলেও মত দেন তিনি।

সেমিনারে অংশ নেয়আ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা মনে করেন, নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিটি ঘটনাতেই কোন না কোনভাবে পুরুষ জড়িত থাকেন। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মধ্যে সংগঠিত ৯৪ শতাংশ নারীর প্রতি সহিংসতায় ঘটনাতেই পুরুষের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

শেষে নারীর প্রতি পারিবারিক সহিংসতা নিয়ে একটি ইন্টারেক্টিভ থিয়েটার শো দেখানো হয়। পরে উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন একশনএইড কর্মকর্তা ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা সরকারী কর্মকর্তারা। এসময় ক্যাম্পের ব্লক মাজি বা রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার তাগিদ দেন আলোচকরা। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষ্যে ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া ১৬ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।