মোঃ কাউছার ঊদ্দীন শরীফ :

কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির প্রতিযোগিতা চলছে ।চট্রগ্রাম -কক্সবাজার মহাসড়কের ইসলামপুরে নতুন অফিস বাজারে এই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গেস ক্রস ফিলিংয়ের অবৈধ কারখানার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন অফিস বাজারের রাসেল এন্টারপ্রাইজ, কাপড়ের দোকান রাসেল ক্লথ স্টোর, মুদির দোকান, তেলের দোকান, পানের দোকান, ঝুপড়ি, চায়ের দোকান এমনকি ওষুধের দোকানেও অবাধে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশসহ জনবহুল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার গুদামজাত করা হয়েছে।

অন্যদিকে নতুন অফিস বাজার সংলগ্ন গেস ক্রস ফিলিংয়ের রাসেল এন্টারপ্রাইজ নামের কারখানা করে শ্রমিকদের মাধ্যমে রাতের আধাঁরে বড় বোতল থেকে ছোট বোতলে অবৈধভাবে ক্রস ফিলিং করে ওজনে কম দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাচ্ছে। তার চলমান এ অপকর্ম আড়াল করতে, সে বিভিন্ন দানবীরের মুখোশ পরে জনগণকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।বিশেষ করে সে এসব বাণিজ্য ও মুখোশধারী ভাল মানুষের আড়ালে নানা অনৈতিক কাজেও জড়িয়ে পড়ে।রাসেল এন্টারপ্রাইজ দোকানে অগ্নিনির্বাপক কোন যন্ত্র নেই। কিছু দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র টাঙানো হলেও তা অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ।

নিয়ম অনুযায়ী, গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি ও মজুত স্থানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রয়োজন হয়। প্রয়োজন হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও। এ ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, জ্বালানি অধিদপ্তরের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার বিধানও রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ম এখানে মানা হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

বিধি মোতবেক ১০টির বেশি সিলিন্ডার মজুদ রেখে বিক্রির ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অধিদফতরের সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪ এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনাধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলিন্ডারে মজুদ করা যাবে। বিধির ৭০ ধারানুযায়ী এসব সিলিন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুদ রাখতে হবে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রাঙ্গনে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। মজুদ করা স্থানের কাছাকাছি আলো বাতাসের উৎস থাকা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে পান- চা-দোকান থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন স্টোরেও পাওয়া যায় এ সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। কিন্তু ঈদগাঁও বাজারসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে নয় শতাধিক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে অনেকের লাইসেন্স নাই।

নতুন অফিসের সচেতন জনগণ ও তার ক্রস ফিলিং প্রতারণার শিকার ক্রেতারা বলেন,ঈদগাঁওর কলেজ সংলগ্ন গ্যাস ক্রস ফিলিংয়ের অবৈধ কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে সংঘটিত অগ্নিকান্ডে দুইজন শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর পর থেকে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। এ বাজারের আশেপাশে মসজিদ মাদ্রাসা সহ রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তার মাঝে গ্যাস সিলিন্ডার গুদামজাত করাই যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ অবৈধ বাণিজ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টি মূলক শাস্তি দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।

রাসেল এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাপড়ের দোকান রাসেল ক্লথ স্টোরের সামনে আজ নতুন ২শ মত গ্যাস সিলিন্ডার রাখছিলাম এখন ২০ টা মত আছে।আমার বড় গুদাম আছে গ্যাস সিলিন্ডার রাখার জন্য ঐ গুদামে শ্রমিকদের মাধ্যমে সব গ্যাস সিলিন্ডার গুদামে রাখে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার সুইটি বলেন, যেসব দোকানে সনদ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস বিক্রি হচ্ছে শীঘ্রই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ঐসব দোকানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।