আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:
করোনাকালীন সময়ে হাজারেরও অধিক জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া দূর্নীতির অভিযোগ তদন্তে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক কর্তৃপক্ষ। দূদক রাঙামাটিস্থ সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক আবুল বাশারের নেতৃত্বে মঙ্গলবার দুপুরে রাঙামাটিস্থ উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে এই অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় দুদকের সহকারি পরিচালক জিএম আহসানুল কবির ও উপ-সহকারি পরিচালক নবিউল ইসলাম অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেছেন।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে চলতি করোনাকালীন সময়ে পাড়াকর্মী ও মাঠ সংগঠক পদে হাজারেরও অধিক জনবল নিয়োগ দিয়েছে উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এসব জনবল নিয়োগে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নিয়োগ বঞ্চিতরা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। দুদক কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট্য বিভাগ উক্ত সংবাদের বিষয়টি আমলে নেয়।
তারই ধারাবাহিকতায় হেড অফিস থেকে রাঙামাটিস্থ সমন্বিত কার্যালয়কে উক্ত ঘুষ ও দুর্নীতির বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় প্রথমে উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য প্রশাসন আশীষ কুমার বড়–য়ার কার্যালয়ে এবং পরবর্তীতে ভাইস চেয়ারম্যান(অতিরিক্ত সচিব) মোঃ নুরুল আলম নিজামীর কার্যালয়ে গিয়ে পাড়াকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলির ফাইলগুলো তলব করেছেন বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন দুদকের এক কর্মকর্তা।
তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট্য পাড়া কেন্দ্রের নিয়োগ সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকা প্রকাশ কান্তি চৌধুরী(সদস্য বাস্তবায়ন) অন্য একটি দায়িত্ব নিয়ে খাগড়াছড়িতে অবস্থান করায় তার সাথে আমাদের সামনেই কথা বলেন ভাইস চেয়ারম্যান মহোদয়। তিনি রাঙামাটি এসে সংশ্লিষ্ট্য সকল তথ্যাবলির ফাইলগুলো দুদককে প্রদান করবেন বলে জানান।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রাপ্ত কাগজপত্রসহ স্থানীয়ভাবে সংগৃহিত তথ্যাবলি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে। তারই আলোকে উক্ত বিষয়ে সরেজমিনে তদন্তের নির্দেশনা আসলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাড়া কেন্দ্রগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে নানান অভিযোগের সত্যতা যাচাই-বাছাই করবে দুদকের টিম। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পরিচালিত টেকসই সামাজিক সেবা প্রকল্পের নানিয়ারচর উপজেলার সম্প্রসারিত পাড়াকেন্দ্রে কর্মী এবং মাঠ সংগঠক নিয়োগসহ পাড়াকেন্দ্র নির্মাণে দুর্নীতি-অনিয়মের কারণে প্রকল্পের কোনো কাজে সহযোগিতা ও অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নানিয়ারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিলাল চাকমা ও সুমনা বড়ুয়া।
নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা সহ বিবিধ সামাজিক সেবা নিশ্চিতকরণে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিসেফের অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক চার হাজারেরও অধিক পাড়া কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে পাহাড়ে। এসব কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাদানে নিয়োগ দেয়া হয় একজন করে পাড়াকর্মী। আর আশপাশে কয়েক কেন্দ্র তত্ত্বাবধানে এলাকাভিত্তিক একজনকে নিয়োগ দেয়া হয় মাঠ সংগঠক পদে।