শাহেদ মিজান, সিবিএন:

হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড আদেশ পাওয়া আসামি মোস্তফার কক্সবাজার জেলা কারাগারে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজারে এসেছেন ডিআইজি প্রিজন। এই মৃত্যুর তদন্ত করার জন্য তিনি কক্সবাজারে এসেছেন। একই সাথে এই মৃত্যুর ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষের কমিটি ছাড়াও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পৃথক তদন্ত কমিটি করে তদন্ত চালাচ্ছেন। তিনিও আলাদাভাবে তদন্তকাজ চালাচ্ছেন। জেল সুপার নেছার আলম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেল সুপার নেছার আলম গণমাধ্যমকে জানান, হাজতি মোস্তফার কক্সবাজার জেলা কারাগারে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজারে এসেছেন ডিআইজি প্রিজন। এই মৃত্যুর তদন্ত করার জন্য তিনি কক্সবাজারে এসেছেন। তিনি কক্সবাজারে অবস্থান করে তদন্ত চালাচ্ছেন। অন্যদিকে এই স্পর্শকাতর মৃত্যুকে গুরুত্ব দিয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামাল হোসেনও একটি পৃথক তদন্ত কমিটি করে তদন্ত চালাচ্ছেন। এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। একই সাথে অনানুষ্ঠানিকভাবে ডিআইজি প্রিজন তদন্ত চালাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড আদেশ পাওয়া আসামি মোস্তফার কক্সবাজার জেলা কারাগারে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ওইদিন বিকেলে বিধি অনুসারে লিখিত অভিযোগ উত্থাপন করেন কারাগারের জেলার মোস্তফা কামাল। ঘটনার পরপরই দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একটিতে ডেপুটি জেলার সাইদুল ইসলামকে প্রধান করে সার্জেন্ট ইন্সপেক্টর মামুনুর রশীদ ও অ্যাকাউন্টেন্ট খন্দকার আজাদুর রহমানকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এই মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার প্রধান কারারক্ষী আবু তাহের, সহকারী প্রধান কারারক্ষী ফখরুল ইসলাম ও কারারক্ষী বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। একই ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন মোস্তফার ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষী জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া কারাগারের সর্বপ্রধান কারারক্ষী মো. হেলাল উদ্দিনের কাছ থেকে এ ঘটনায় আগামী ৩ কর্মদিবসে ‘লিখিত কৈফিয়ত’ চাওয়া হয়েছে। কৈফিয়ত দিতে বলা হয়েছে কারারক্ষী ইকবাল হোসেনকেও।
ঘটনার বিস্তারিত অনুসন্ধানপূর্বক দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেল সুপার। একই ঘটনায় কারা হাসপাতালের ডা. মো. শামীম রাসেলকে প্রধান ও ডা. শামীম রেজাকে সদস্য করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাও ঘটনার বিস্তারিত জেনে প্রতিবেদন জমা দেবেন।

তথ্য মতে, কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফর রহমান আজাদকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাজতি মোস্তফা রহস্যজনকভাবে জেলা কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। সোমবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোস্তফা ফাঁসিতে আত্মহত্যায় মারা গেছেন বলে দাবি করে কারা কর্তৃপক্ষ।

তবে কারাগারে ফাঁসি খাওয়ার মতো কোনো অবস্থা বন্দিদের পক্ষে থাকে না বলে দাবি করেছেন কারাভোগ করে বের হওয়া অনেক বন্দি। এ কারণে তার মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দেয়। হাজতি মোস্তফা (২৫) কক্সবাজার সদরের ইসলামাবাদ ইউনিয়নের হরিপুর এলাকার বশির আহমেদের ছেলে। মারামারি ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৮ নভেম্বর মোস্তফা কারাগারে আসেন। তার মামলায় ২৯ নভেম্বর রিমান্ড শুনানি ছিল। আদালত তাকে একদিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন। আদালত থেকে তাকে কারাগারে আনার পর তার কক্ষে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাকে পেয়ে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক হাজতি মোস্তফাকে মৃত ঘোষণা করেন।