প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
মহান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চিরতরে চলে গেলেন আজীবন কুরআনুল কারিমের শিক্ষকতার খেদমতে নিবেদিত, অসংখ্য হাফেজে কুরআনের পরম শ্রদ্ধেয় উস্তায, রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের বায়তুশ শরফ পাড়ার বাসিন্দা মাওলানা হাফেজ আব্দুল করিম রহ.। তিনি ২৯ নভেম্বর ( রবিবার) দিবাগত শেষ রাত ২ টায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন-ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল আনুমানিক ৫২ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-শুভানুধ্যায়ীসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে যান। কুরআনুল কারীমের একনিষ্ঠ এ শিক্ষকের ইন্তেকালে এলাকাবাসী,স সহকর্মী, শিক্ষার্থীসহ দ্বীনি শিক্ষাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
৩০ নভেম্বর (সোমবার) যোহরের নামাযের পর নিজ বাড়ির সম্মুখস্থ মাঠে মরহুমের নামাযে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাযে জানাযার পূর্বে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ করেন, রামু জোয়ারিয়ানালা এমদাদুল উলুম মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা হাফেজ আব্দুল হক, রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ মোহছেন শরীফ, ঈদগড়ের প্রবীণ আলেম ও মরহুমের উস্তায মাওলানা হাবিবুর রহমান, ঈদগড় চরপাড়া নূরানী তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মুফতি ছৈয়দ নূর, মরহুমের বড় ভাই আব্দুর রহিম। স্মৃতিচারণপর্ব সঞ্চালনায় ছিলেন, মরহুমের একান্ত ছাত্র, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের সিনিয়র সহ-সভাপতি, তরুণ লেখক হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর। মাওলানা হাফেজ আব্দুল হকের ইমামতিতে নামাযে জানাযায় মরহুমের হাতে গড়া বহু হাফেজে কুরআন ও বিপুল সংখ্যক ওলামায়েকেরামসহ অসংখ্য শোকার্ত তৌহিদী জনতা প্রখর রোদ উপেক্ষা করে শরীক হন। নামাযে জানাযা শেষে স্থানীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে মরহুমকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট হাফেজে কুরআন মাওলানা হাফেজ আব্দুল করিম রহ. রামু জামেয়াতুল উলুম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষকতার খেদমতে যুক্ত হয়ে কর্মজীবনের সূচনা করেন। সেখানে বেশ ক’বছর একনিষ্ঠতা ও দক্ষতার সাথে কুরআনুল কারীমের শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসায় দীর্ঘ ৮ বছর , ঈদগড় হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ২ বছর এবং ঈদগড় চরপাড়া নূরানী তা’লীমুল কুরআন মাদ্রাসার হিফজ বিভাগে সুদীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ হিফজুল কুরআনের শিক্ষকতার মহান খেদমত আঞ্জাম দেন। এরই মধ্যে বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি বিভিন্ন রোগে ভোগছিলেন। তবে নানা রোগব্যাধি ও প্রতিকুলতার মাঝেও পবিত্র কুরআনের আলোকরশ্মি ছড়িয়ে দেয়ার ব্রত নিয়ে কুরআনের বাগানে দিবারাত্রি বিরামহীন সময় পার করছিলেন তিনি। আজীবন তিনি নিরলসভাবে কুরআনুল কারীমের শিক্ষাদানের খেদমতে যুক্ত থেকে কাটিয়েছেন। দীর্ঘ এ কর্মজীবনে তিনি গড়ে তুলেছেন অসংখ্য দক্ষ হাফেজে কুরআন। যাঁরা সুনামের সাথে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন হিফজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দ্বীনি শিক্ষায়তনে শিক্ষকতার খেদমতে নিবেদিত রয়েছেন।
মরহুম পিতার রুহের মাগফিরাত কামনায় দু’আ চেয়েছেন, মরহুমের দ্বিতীয় ছেলে, জামিয়া এমদাদিয়া আজিজুল উলুম পোকখালীর ছাত্র মুহাম্মদ সাজেদুল করিম তামিম।
এদিকে গুণী শিক্ষক মাওলানা হাফেজ আব্দুল করিম রহ. এর ইন্তেকালে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি কক্সবাজার জেলা আমীর মাওলানা হাফেজ ছালামতুল্লাহ, রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল খালেক কওছর, শিক্ষা পরিচালক মাওলানা শফিউল আলম, কক্সবাজার ইসলামী সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদের সভাপতি মাওলানা নুরুল হক চকোরী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কাযী এরশাদুল্লাহ, উখিয়ারঘোনা তা’লিমুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক, মাওলানা মুহাম্মদ হাসান, রাজারকুল আসমা ছিদ্দিকা (র.) মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা জায়নুল আবেদীন, মরহুমের ছাত্র, রামু লেখক ফোরামের সহ-সভাপতি হাফেজ সাইফুল ইসলাম, লম্বরীপাড়া দারুল কুরআন নূরানী একাডেমীর পরিচালক হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর, হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন কক্সবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা হাফেজ দেলোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ কক্সবাজার জেলা সভাপতি হাফেজ শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ দিদারুল আলম, রামু উপজেলা সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল করিম, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ অলিউল্লাহ আরজু প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ আল্লাহর দরবারে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।