এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া :
চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতু পয়েন্ট থেকে যাত্রীবেশে সৌদিয়া চেয়ারকোচে উঠে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেফতারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা শুরুতে ছোট ছোট ছিনতাই করতো। পরে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে বাসে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। এ ডাকাত দলে সদস্য রয়েছে ৭ জন।
গতকাল সোমবার (৩০ নভেম্বর) র্যাব-৭ চট্টগ্রামের চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে ডাকাত দলের ৬ সদস্যকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হলেন মো. ইয়াহিয়া প্রকাশ জয়নাল (২৬), ছলিম উল্লাহ (৩৩), ছাবের আহমদ (২৯), আবুল কালাম (৩০), শাহ আমান প্রকাশ বাটু (২৮) ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (২৫)। তাদের বাড়ি কক্সবাজারের সদর, চকরিয়া ও চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকায় বলে জানিয়েছে র্যাব। এদের মধ্যে মো. ইয়াহিয়া প্রকাশ জয়নাল ডাকাত দলের মূল হোতা। ডাকাতির পরিকল্পনা জয়নাল করে বলে জানায় র্যাব।
র্যারের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, গত ২৭ নভেম্বর রাতে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে দুইজন যাত্রীকে গুলিবিদ্ধ ও একজনকে কুপিয়ে আহত করে টাকা, মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ২৮ নভেম্বর চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়।
মামলাটি রুজু হবার পর থেকে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-৭ ছায়া তদন্তে নেমে ডাকাতদের শনাক্ত করে। এরই অংশহিসেবে রোববার দুপুরে ডাকাতির মূল হোতা মো. ইয়াহিয়া প্রকাশ জয়নালকে আটক করি। তার কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ওয়ানশুটার গান, এক রাউন্ড গুলি ও রামদা উদ্ধার করি।
পরে তার দেওয়া তথ্যে কক্সবাজার সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছলিম উল্লাহ, ছাবের আহমদ, আবুল কালাম ও শাহ আমান প্রকাশ বাটুকে আটক করি। তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া ২০টি মোবাইল, এক জোড়া স্বর্ণের দুল, নগদ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে মহেশখালী থেকে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহকে আটক করা হয়। তাদের দলের একজন সদস্য পলাতক রয়েছে।
লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, চট্টগ্রাম শহরের সিনেমা প্যালেস থেকে টেকনাফগামী সৌদিয়া পরিবহনের বাসে বাকলিয়া নতুন ব্রিজ থেকে যাত্রীবেশে বাসে উঠে ডাকাত দলের ৭ সদস্য। বাস চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী পর্যন্ত পৌঁছালে অস্ত্রের মুখে বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। তাদের একজন সদস্য বাসটি চালিয়ে ঈদগাঁহ পর্যন্ত নিয়ে যায়। ডাকাতিতে বাধা দিলে দুইজন যাত্রীকে গুলিবিদ্ধ ও একজনকে কুপিয়ে জখম করে তারা।
তিনি বলেন, মো. ইয়াহিয়া প্রকাশ জয়নাল ডাকাত দলের সর্দার। ডাকাতির পরিকল্পনা জয়নাল করেছিল। ডাকাতিতে পাওয়া জিনিসপত্র মোট ৯ ভাগ হয়। এর মধ্যে জয়নাল ও পলাতক আরেকজন দুইভাগ করে পায়, কারণ তারা অস্ত্রধারী।
র্যাবের অধিনায়ক বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে নভেম্বরের ৫ ও ১২ তারিখ তারা আরও দুইটি ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। তাদের গ্রেফতার দেখানোর পর নিজেরা আমাদের কাছে ডাকাতির বিষয়টি স্বীকার করেছে। ইয়াহিয়া প্রকাশ জয়নালসহ ডাকাত দলের সদস্যরা আগে ছোটখাটো ছিনতাই করতো। পরে তারা ডাকাতির দিকে ধাবিত হয়।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আলী আশরাফ তুষার, সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাহমুদুল হাসান মামুন ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. রকিবুল হাসান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।