বিডিসিএসও প্রসেসের ঘোষণাপত্র ২০২০ প্রকাশ

উন্নয়ন ও মানবিক খাতে বৈদেশিক সহায়তায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত এবং বিলাসিতা পরিহারের আহ্বান সুশীল সমাজের

প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ০৪:৩৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
বাংলাদেশে উন্নয়ন এবং মানবিক খাতে আসা সকল বৈদেশিক সহায়তায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং এসব সহায়তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করার স্বার্থে সকল ধরনের বিলাসি ব্যয় পরিহারের আহ্বান জানিয়েছে দেশব্যাপী প্রায় ৭০০ এনজিও এবং সুশীল সমাজ সংগঠনের ফোরাম বিডিসিএসও প্রসেস। আজ এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিডিসিএসও গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সম্মেলনে গৃহীত এই ঘোষণাপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করতে গিয়ে এই দাবি তুলে ধরে। এই ঘোষণাপত্রে মোট ২২টি দাবি রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ও জাতীয় এনজিও/সিএসও নেতৃবৃন্দ শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তায় নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখে মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বগুলো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে হস্তান্তর করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহকে অনুরোধ জানান। বিডিসিএসও প্রসেসে ওয়েবসাইটে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই প্রকাশিত ঘোষণাপত্রটি পাওয়া যাবে বলে সংবাদ সম্মেলন আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বিডিসিএসও প্রসেসের জাতীয় সমন্বয়কারী এবং কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তৃতা রাখেন মোস্তফা কামাল আকন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে পাবনা থেকে পারভিন আক্তার, ময়মনসিংহ থেকে খন্দকার ফারুক আহমদ, রংপুর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, চট্টগ্রাম থেকে মো. আরিফুর রহমান, বরিশাল থেকে শুভংকর চক্রবর্তী, রহিমা সুলতানা কাজল এবং আনোয়ার জাহিদ, খুলনা থেকে আসাদুজ্জামান শেখ, কুড়িগ্রাম থেকে সায়েদা ইয়াসমিন, ঢাকা থেকে মাসুদা ফারুক রত্না, সিলেট থেকে তোফাজ্জল সোহেল, রাঙ্গামাটি থেকে ললিত চাকমা এবং লক্ষ্মীপুর থেকে সাবরিনা আক্তার বিডিসিএসও’র দাবিগুলো তুলে ধরেন।
আকবর হোসেন বলেন, ৬,৮ এবং ১০ অক্টোবর বিডিসিএসও’র ভার্চুয়াল সম্মেলনে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ অংশ নেন এবং এতে মোট অংশগ্রহণকারী ছিলেন প্রায় ৭০০ জন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ। আন্তর্জাতিক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এতে অংশগ্রহণ করেন, যেমন আইসিভিএ থেকে মিঃ ইগনাসিও প্যাকার, ডাব্লুএইচএইচএএফ থেকে ড. হ্যানি অল বান্না এবং সোশ্যাল ওয়াচ থেকে মিঃ রবার্তো বিসিও। বাংলাদেশ থেকে শাহিন আনাম এবং শিরীন হক ছাড়াও এডাব’র মি. জসিম উদ্দিন, এফএনবি’র মি. রফিকুল ইসলাম, সিডিএফ’র মুর্শেদ সরকার এবং সুপ্র’র আব্দুল আউয়াল এই সম্মেলনে বক্তৃতা করেন। অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত, এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী ফয়সল, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. জেমস মুন এবং মাল্টিজার ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজন গিমরে এই সম্মেলনে বক্তৃতা করেন।
আরিফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে অবশ্যই বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে হবে। তিনি এজেন্সিগুলিকে তাদের অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়াটির সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং স্বার্থের দ্বন্দ্ব থেকে মুক্ত রাখার অনুরোধ করেন। শুভঙ্কর চক্রবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তার স্থানীয়করণের জন্য নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া এবং উগান্ডার মতো নীতি এবং স্থানীয় জবাবদিহিতা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। আসাদুজ্জামান শেখ বলেন, স্থানীয়দের কাছে প্রযুক্তি ও জ্ঞান স্থানান্তর হওয়া উচিত এবং বিদেশি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরবরাহের মাত্রা নয়,প্রয়োজনের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনা করা উচিৎ। তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে তাদের পরিচালন ব্যয় একক ডিজিটের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার আহ্বান জানান।
সায়েদ ইয়াসমিন বলেন, স্থানীয় এনজিওগুলো অর্থায়ন করার ক্ষেত্রে আরোপিত নানা জটিল শর্ত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এবং কোনরকম মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়াই অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। মাসুদা ফারুক রত্না আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে সহায়তার স্বচ্ছতার নীতিমালা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তাদের ব্যয়ের সংস্কৃতিতে বিলাসি ব্যয়’ এবং ‘প্রয়োজনীয় ব্যয়’ চিহ্নিত করার সুপারিশ করেন তোফাজ্জল সোহেল জাতিসংঘ অঙ্গসংস্থাগুলোকে নতুন সংস্থা তৈরি না করে বিদ্যমান স্থানীয় নাগরিক সমাজগুলিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান, তিনি বলেন- জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর উচিত তহবিল সংগ্রহ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিবর্তে মানবাধিকার প্রচারে আরও বেশি জোর দেওয়া।