সিবিএন ডেস্ক:
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কিংবদন্তি অভিনেতা-নির্দেশক আলী যাকের। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটের দিকে দাফন সম্পন্ন হয়।
এমনটাই জানালেন যাকের পরিবারের ঘনিষ্ঠজন অভিনেতা ফারুক আহমেদ।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতাল থেকে আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। স্বজন ও সংগঠনগুলো সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধা ও শেষ বিদায় জানান তাকে।
বেলা ১টার দিকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আলী যাকেরের কর্মস্থল বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক-এর অফিসে। সেখানে কিছুক্ষণ রেখে নিয়ে যাওয়া হয় বনানী গোরস্থান মসজিদে। বাদ আসর জানাজা শেষে দাফনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
আজ (২৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ক্যানসার ও করোনাযুদ্ধে হেরে গেলেন বহুমাত্রিক এই অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা।
গেল চার বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন আলী যাকের। সম্প্রতি শরীরের অবনতি হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুদিন আগে করোনা টেস্ট করা হলে পজিটিভ ফল আসে।
১৯৭২ সালের আরণ্যক নাট্যদলের ‘কবর’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পথচলা শুরু করেন এই নাট্যব্যক্তিত্ব। পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সাল থেকে কাজ করছেন নাগরিক নাট্যসম্প্রদায় নিয়ে। মঞ্চের পাশাপাশি টিভি নাটকেও সমাদৃত হন এই তারকা। স্ত্রী সারা যাকেরকে নিয়ে গড়ে তোলেন দেশের বৃহৎ বিজ্ঞাপনী সংস্থা। সাম্প্রতিক সময়ে যার হাল ধরেছেন তারই পুত্র অভিনেতা ইরেশ যাকের।
সকালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনশিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেছেন।
১৯৭৭ সালের আলী যাকের ও সারা যাকেরের বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুই সন্তান, পুত্র ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রিয়া সর্বজয়া।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রতনপুর গ্রামে জন্ম হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শব্দসৈনিকের।