ছোটন কান্তি নাথ :
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, কক্সবাজারের সুনীল সমুদ্র অবলোকনের দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণ হওয়ায়। এই মেরিন ড্রাইভ সড়ক পাল্টে দিয়েছে সেখানকার মানুষের জীবনযাপনও। এরইমধ্যে মেরিন ড্রাইভ ঘিরে মহাসড়ক সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রামুর ফঁতেখারকুল, উখিয়ার মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়কে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। কক্সবাজার লিংক রোড থেকে লাবনী মোড় পর্যন্ত চারলেনের মহাসড়কের কাজও সহসা শেষ হবে। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ রবিবার সকাল এগারটার দিকে সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটি সংযোগ সড়ক প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। এ সময় তিনি কক্সবাজার ঘিরে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেন এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠি এসব উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল ভোগ করছেন বলেও জানান।

মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আজ রবিবার উদ্বোধন করেন ৩৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটির সংযোগ সড়ক প্রকল্পের কাজের। সড়কটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার বরইতলীর একতাবাজার থেকে পেকুয়ার মগনামা হয়ে দেশে প্রথমবারের মতো নির্মিতব্য বানৌজা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

এ উপলক্ষে পেকুয়া স্টেডিয়ামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কক্সবাজার-১
(চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের এমপি ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ জাফর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কক্সবাজার-২ আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ আসনের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমার মেয়র। উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, চকরিয়া
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, পেকুয়ার ইউএনও মো. মোতাছেম বিল্লাহ, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী, পেকুয়া থানার ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ কক্সবাজার জেলা, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। এদিকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে
কক্সবাজার ঘিরে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ওপর একটি গান গেয়ে শোনান মীরাক্কেল তারকা চকরিয়ার সন্তান কমর উদ্দিন আরমান।

অনুষ্ঠিত জনসভায় উপস্থিত জনতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপির চলমান রাজনীতি নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজধানীতে সাতটি বাসে আগুন দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিএনপি আবারো জ্বালাও-পোড়াও এর রাজনীতি শুরু করেছে। অপরাজনীতির জন্য জনগণ বিএনপির আন্দোলনে সাড়া না দেওয়ায় দলটির নেতাকর্মীরা হিংসা চরিতার্থ করতে আগুন-সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অধিকার সব দলের রয়েছে। কিন্তু কর্মসূচির নামে জনগণের শান্তি ও স্বস্তি বিনষ্টের কোনো অপচেষ্টা
করলে সমুচিত জবাব দেবে সরকার। কারণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে বিএনপি। অথচ ভিডিও চিত্রে সব প্রকাশিত হয়েছে। মুখচ্ছবি কখনো মুখোশ দিয়ে ঢাকা যায় না। কথামালার চাতুরী দিয়ে সব ভুলিয়ে রাখা যায় না। বিএনপির অবস্থান দ্বিমুখী উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যেকোনো নির্বাচনে পরাজিত হলেই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়। আবার কোনো নির্বাচনে জয়ী হলেই বলে সরকার হস্তপে হয়েছে, নতুবা বিএনপির প্রার্থী আরো বেশি ভোটে বিজয়ী হতে পারতো।