সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
করোনাভাইরাসের অতিমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা ছিল শুরু থেকেই। অতিমারি ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সামাজিক সংযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়ে অর্থনীতি। কাজ হারায় অনেক মানুষ। অর্থনৈতিক দুরবস্থায় টিকতে না পেরে এই ঢাকা শহর ছাড়েন অনেকেই। এমন দুর্যোগেও আশা জাগিয়েছে ইন্টারনেট। সোশ্যাল মিডিয়া পেজ নির্ভর উদ্যোগের মাধ্যমে কেউ শুরু করেছেন নতুন জীবন। আবার কেউ কেউ স্থবির ব্যবসাকেও দিয়েছে গতি। স্থবির অর্থনীতিতেও বেড়েছে ই-কমার্স বাজারের আকার, অনলাইন লেনদেনও বেড়েছে আশাতীত।
মাহমুদা আক্তার নিঝুম, একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। ঘর সাজানোর পাশাপাশি গায়ে হলুদ, বিয়ে, জন্মদিন, বৌভাতসহ বিভিন্ন অনুষ্টানের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর কাজ করে থাকেন তিনি। পার্লার এর কাজেও রয়েছে তাঁর পারদর্শীতা। অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে কাজগুলো করে থাকেন তিনি। এসব ছাড়াও রান্না করার সখ তার অনেক আগে থেকেই। বাড়িতে আসা মেহমানদের নিজ হাতে সযত্নে রান্না করা খাবার পরিবেশন করতে ভালোবাসেন নিঝুম, অন্যদের তৃপ্তিতেই যার আনন্দ! বর্তমানে তিনি অনলাইনে খাবার সরবরাহ ব্যবসায় একজন সফল উদ্যোক্তা।
তাঁর সফলতার গল্প জানতে চাইলে মাহমুদা আক্তার নিঝুম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই দেখছিলাম মানুষ ফেসবুকে এটা-সেটা বিক্রি করে। আমি অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই নিজ হাতে রান্না করা খাবার বিক্রির জন্য ফেসবুকে ‘Khaite mon chay’ নামক একটা পেইজ খুলি, সেই থেকেই আমার এই পথ চলা শুরু। বাংলা খাবার, চাইনিজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মিস্টি, আচার, চিলি সস ও বানিয়ে থাকি। শুরু করেছিলাম ঢাকার ভেতরে। এখন ঢাকার বাইরেও আচার ও চিলি সস ইত্যাদি পাঠিয়ে থাকি। সপ্ন আমার অনেক বড়; আশা রাখি, আমার ‘Khaite mon chay’ নামক পেইজ একদিন সারা বিশ্বে পরিচিতি পাবে এবং একটি আর্ন্তজাতিক মানের রেস্টুরেন্টে পরিনত হবে, ইনশাআল্লাহ্।
তিনি আরও বলেন, মাত্র কয়েক মাস আগে খোলা পেইজ থেকে এখন আমার ভালো আয় থাকে। প্রথম ৬ মাস নিজের খরচ উঠে মোটামুটি লাভ দেখেছেন তিনি। খাবারের মান ভালো হওয়ায় এবং পরিচিতি লাভের পর শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই সরবরাহ করে মাসিক ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। ঢাকার বাইরেও জেলা শহরে বিভিন্ন ধরনের আচার, জ্যাম, জেলি, ইত্যাদি চাহিদা মাফিক অগ্রিম পেমেন্ট এর ভিত্তিতে সরবরাহ করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। তাছাড়াও অর্ডারের ভিত্তিতে ড্রেস, জুয়েলারি, শাড়ি, কসমেটিক্স, পারলার সামগ্রী, রান্নার ইনগ্রেডিয়েন্টসও সববরাহ দিতে আগ্রহী।
করোনার স্থবির অর্থনীতিতে মাহমুদা আক্তার নিঝুম এর মতো ছোট ছোট উদ্যোগ যে কতগুলো তৈরি হয়েছে, তা হিসাব করে বের না করা গেলেও বেড়েছে অনলাইনে লেনদেন। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) দেওয়া এক তথ্যমতে, অনলাইন লেনদেন ২০১৭ সালে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার মতো ছিল। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে যথাক্রমে ৩ ও ৪ কোটি টাকা করে লেনদেন বেড়েছে। ২০২০ সালে এসে এই বাজার দুই হাজার কোটি টাকা বেড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। শুধু টাকার লেনদেনই নয়, ই-ক্যাব বলছে অনলাইন বাজারের আকার ২০২০ সালে দাঁড়াবে ১৬ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে এর আকার ছিল ১৩ হাজার কোটি টাকার।
আধুনিক যুব সমাজকে চাকুরির পিছনে না ছুটে ঘরে বসেই রোজগারের প্রতি উৎসাহিত করেন মাহমুদা আক্তার নিঝুম। তাঁর এই উদ্যোগ নি:সন্দেহে আরেকটি প্রশংসনীয় এবং অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

মাহমুদা আক্তার নিঝুম এর পেইজ ‘Khaite mon chay’ -এ খাবার এবং অন্যান্য পণ্যের অর্ডার করতে যোগাযোগ এর জন্য
https://www.facebook.com/Khaite_mon_chay-101764438236067/