এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া:
চকরিয়া পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মনোরম পরিবেশে ৩০ শতক জমির উপর ১৯৯৫ সালে গড়ে উঠেছে রহমানিয়া বালক বালিকা এতিম খানা, হাফেজখানা ও নুরানী মাদ্রাসা। এলাকায় ঝরেপড়া শিক্ষার্থী ছেলে-মেয়েদের কোরান শিক্ষা দিয়ে শিক্ষায় আলো ছড়াচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি থেকে শত শত কোরানে হাফেজ শিক্ষাগ্রহন শেষে এলাকা পেরিয়ে দেশের বিভিন্ন জনপদে কোরানের আলোয় ছড়িয়ে যাচ্ছে।

চকরিয়া জনপদে রহমানিয়া বালক-বালিকা এতিমখানা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত করেন দক্ষিন চট্টগ্রামের জনপ্রিয় ও বরণ্য আলেম হযরত মৌলানা আলহাজ্ব হাফেজ বশির আহমদ। তার নিরলশ প্রচেস্টায় প্রতিষ্টিত এই মাদ্রাসায় বর্তমানে ২ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঠদান করে যাচ্ছে। মাদ্রাসাটি শুরুতে চকরিয়া পৌরসভার দিঘরপানখালী ৯নং ওয়ার্ডে ১৯৯২ সালে গনি সিকদার পাড়া জামে মসজিদের হাফেজ বশির আহমদ খতিব থাকাকালীন মসজিদ সংলগ্ন এলাকার গরিব আসহায় এতিম ছেলে মেয়েদের কোরান শিক্ষার জন্য ১৯৯৮ সালে শাহ জব্বরিয়া এতিমখানা ও শাহা মজিদিয়া হাফেজ খানা প্রতিষ্ঠিত করেন।

মসজিদ সংলগ্ন ওয়াকফ জমিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে হাফেজ বশির আহমদ নিজের উদ্যেগে সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বহন করেন। এতিমখানার নিবন্ধন নিতে হলে ৩০ শতক জমির প্রয়োজন হলে কেউ জমির দিতে রাজি না হওয়া প্রখ্যাত আলেম হাফেজ বশির আহমদ এতিম খানার নামে নিজের ক্রয়কৃত পুকপুকুরিয়া মৌজার ৩০ শতক জামিন ওয়ার্কফ দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেন। ২০০৫ সালে ও ২০০৭ সালে ২ জন এতিমের নামে ক্যাপিটেশন প্রাপ্ত হন।

এভাবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২২ জন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রহমানিয়া বালক-বালিকা এতিম খানা ক্যাপিটেশন প্রাপ্ত হয়। ওই সময় সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে পরিদর্শনে এসে দেখে এতিমখানাটি দিগরপানখালী মৌজায় আর জমি পুকপুরিয়া মৌজায়। সমাজা সেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জমি যেখানে প্রতিষ্টানও সেইখানে হতে হবে। অন্যথায় রেজিষ্ট্রিশন বাতিল হয়ে যাবে। এই জটিলতায় পুকপুকুরিয়ায় রহমানিয়া এতিমখানা হাফেজখানা ও নুরানী মাদ্রসা প্রতিষ্টানের নামে হাফেজ বশির আহমদের ক্রয় কৃত ৩০ শতক জমির উপর পুকপুকুরিয়া মৌজায় রহমানিয়া বালক বালিকা এতিম খানা নামে ওয়াকফ করে।

২০০৫ সালে শাহ জব্বরিয়া এতিম খানা হাফেজখানা মৌলানা আলহাজ্ব হাফেজ বশির আহমদ নামে ৩০ শতক জমিন দিয়ে শাহ জাবরিয়া নামের পরিবর্তনে রাহমানিয়া বালক বালিকা হাফেজ খানা, এতিম খানা, নুরানী মাদ্রাসা প্রতিষ্টিত করে। পুকপুকুরিয়াস্থ রাহমানিয়া বালক বালিকা মাদ্রাসায় চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল করিম সাঈদী, চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী অনেকবার পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, বর্তমানে রহমানিয়া এতিমখানার ২২ জন ছাত্রছাত্রীর নামে ক্যাপিটেশন প্রাপ্ত দুইশতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তাদের পাঠদানে আছেন ৬ জন শিক্ষক। তদমধ্যে ২ জন মহিলা ও ৩ জন হাফেজ পুরুষ শিক্ষক এবং একজন জন বাংলা শিক্ষক। মোট ছয়জন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে মাদ্রাসার পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে রহমানিয়া বালক বালিকা এতিমখানা সরকারী ক্যাপিটেশন প্রাপ্ত ২২ জন ছাত্র ছাত্রীর নামে প্রতি জন মাসে ২ হাজার টাকা করে বৎসরে দুইবার সরকারী অনুদান পাচ্ছেন। রহমানিয়া বালক বালিকা এতিমখানার জন্য সকলের সাহায্য সহযোগিতা এগিয়ে আসতে এবং সার্বিক সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসি।