সিবিএন ডেস্ক:

১৫ নভেম্বর গঠিত হাটহাজারী মাদ্রাসায় মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটির বিরুদ্ধে সংগঠনটির প্রয়াত আমির আল্লামা আহমদ শফীর অনুসারীরা আরও একটি কমিটি করতে চান। এ কমিটি গঠনে আরও সময় নিতে চান সম্মেলন থেকে বঞ্চিত আলেমরা।

শফীপন্থী আলেমরা বলছেন, দুটো বিষয়কে সামনে রেখে প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রথমত, গত ১৫ নভেম্বর বাবুনগরীর নেতৃত্বে যে কমিটি হয়েছে, তাতে কয়েকজন সিনিয়র আলেমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ইতোমধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাছ নতুন কমিটিকে `অগঠনতান্ত্রিক’ বললেও অন্য কয়েকজন সিনিয়র আলেম এ বিষয়ে নীরব রয়েছেন। সেক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটির সঙ্গে সিনিয়র কয়েকজন আলেমকে যুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে হেফাজতের আরও একটি কমিটির প্রভাবশালী একজন আলেম বলেন, ‘আমরা ধীরে-ধীরে প্রক্রিয়াটিকে এগিয়ে নিচ্ছি। চেষ্টা করছি সিনিয়র আলেমদের সম্পৃক্ত করতে। এটা কিছুদিন পর স্পষ্ট হবে।’

শফীপন্থী আলেমদের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকায় আহমদ শফীর শিষ্যদের একটি ইসলাহি সভা হবে। এই সভায় হেফাজতের আরেকটি কমিটি করার বিষয়ে আলোচনা হবে।

ইসলাহি সভায় পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে পর্যালোচনা হবে জানিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের একটি সূত্র জানায়, আলোচনা হলেও কমিটি গঠন হবে না। কমিটি গঠনের আগে বাবুনগরীর কমিটির কাছে সমঝোতার বার্তা দেওয়া হতে পারে। যাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে, তাদেরকে কমিটিতে ফিরিয়ে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হেফাজত রাখা।

এ বিষয়ে বাবুনগরী নেতৃত্বাধীন হেফাজতের নায়েবে আমির ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (কাসেমী) সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসূফী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সমঝোতা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তবে এটা অসম্ভব কিছু না। ভুল-ত্রুটি হতেই পারে।’

আহমদ শফীর মৃত্যুর প্রায় দুই মাস পর ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় প্রতিনিধি সম্মেলনে নতুন কমিটি গঠন করে হেফাজত। কমিটিতে আহমদ শফীর সন্তান, সাবেক প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানী, ইসলামী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাসনাত আমিনী, মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আলতাফ হোসাইনসহ অনেকে বাদ পড়েন।

নতুন কমিটির প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক দায়িত্বশীল জানান, শফীপন্থী আলেমদের মধ্যে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের মতামত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মুফতি ওয়াক্কাছ শুক্রবার রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি হেফাজত নিয়ে চিন্তা করছি না। যে কমিটি হয়েছে, এটা অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিক, তা বলেছি। আল্লামা আহমদ শফী সাহেবের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এর পেছনে কাদের হাত আছে, এটা দুশ্চিন্তার বিষয়।’

শফীপন্থী আলেমদের সূত্র জানায়, আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহে সারাদেশের বেশ কয়েকটি জেলা সফর করবেন তারা। এরপর ঢাকায় আল্লামা আহমদ শফীসহ শীর্ষ আলেমদের স্মরণে সভা করবেন। এই প্রক্রিয়াটির মধ্য দিয়েই শফীপন্থী হেফাজতের নতুন লক্ষ্য স্পষ্ট হবে।

জানতে চাইলে ইসলামী ঐক্যজোট নেতা মাওলানা আলতাফ হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের মুরুব্বিরা পরামর্শ করছেন, আলোচনা করছেন। আশা করি কিছুদিন পর বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বশীলরা কথা বলবেন।’