সিবিএন ডেস্ক:
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা সশস্ত্র বাহিনী জাতির গর্ব ও আস্থার প্রতীক। আগামীকাল শনিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার মহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায়, বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতাসহ জাতিগঠনমূলক কর্মকাণ্ডে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। কেবল দেশেই নয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে পেশাগত দক্ষতা, সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে চলেছেন।’

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবসে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার নেতৃত্বে আমরা দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।’

রাষ্ট্রপতি সাতজন বীরশ্রেষ্ঠকে যাঁরা মাতৃভূমির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সময়ে দেশ ও দেশের বাইরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্যদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন। রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধাহত সদস্য ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের এই দিনে তিন বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ পরিচালনা করে। তাদের সম্মিলিত আক্রমণে হানাদার বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে যা আমাদের বিজয় অর্জনকে ত্বরান্বিত করে। মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ও বীরত্বগাঁথা জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।

রাষ্ট্রপ্রধান আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত থেকে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন।

আবদুল হামিদ বলেন, সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে। এ কর্মপরিকল্পনা নিঃসন্দেহে সশস্ত্র বাহিনীকে আরো আধুনিক, দক্ষ ও গতিশীল করবে। যেকোনো বাহিনীর উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো নেতৃত্বের প্রতি গভীর আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ, পেশাগত দক্ষতা এবং সর্বোপরি শৃঙ্খলা। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা নেতৃত্বের প্রতি পরিপূর্ণ অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনীর গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন– এ প্রত্যাশা করি।

রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং বাহিনীগুলো সদস্য ও তাঁদের পরিবারবর্গের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।