এনটিভি : প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তরুণ প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের আহ্বান জানান।
আজ মঙ্গলবার রাতে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সজীব ওয়াজেদ জয় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দেন। দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের জন্য এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) তরুণদের সংগঠন ‘ইয়াং বাংলা’ ২০১৪ সালে আত্মপ্রকাশের পর মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্লোগান ‘জয় বাংলা’র নামে চালু করে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’। ডা. নুজহাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিআরআইয়ের ট্রাস্টি নসরুল হামিদ। এবার দুই ক্যাটাগরিতে মোট ৩০টি সংগঠনকে পুরস্কৃত করা হয়।
২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ‘ইয়াং বাংলা’ তরুণদের ১৩০ সংগঠনকে নিজ সমাজের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন থেকে কাজের জন্য অর্জন করেছে পুরস্কার।
যেকোনো সমস্যায় নালিশ না করে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু মানুষের একটা স্বভাব আছে, কেন যেন তারা সমস্যা নিয়ে থাকেন। আর শুধু নালিশ করা যে, আমাদের বাংলাদেশে এটা ভালো হচ্ছে না, ওটা ভালো হচ্ছে না, এটা খারাপ হচ্ছে, এখনও পিছিয়ে আছি- এই নালিশ তারা সারাক্ষণ করে যায়। কিন্তু এখানে যে সংগঠনগুলো, এরা কিন্তু নালিশ করছে না। এরা সমস্যা দেখছে এবং নিজেদের চেষ্টায় নিজেদের মেধায় নিজেদের পরিশ্রম দিয়ে সেই সমস্যা সমাধান করার চেষ্টাও করে যাচ্ছে। তাদের কিন্তু বিরাট সংগঠন নয়। আমাদের ইয়াং বাংলার এটাই উদ্দেশ্য ছিল- এই ছোট ছোট সংগঠন।’
‘একজন যুবক, একজন ব্যক্তি পরিশ্রম করে যাচ্ছে সেই গ্রামে বসে, তাঁর নিজের চিন্তা দিয়ে নিজের ধারণা দিয়ে। তাঁর সমাজের মানুষকে সাহায্য করতে। তিনি কিন্তু ওখানে বসে নালিশ করছেন না। তিনি পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এ সমস্যাটাকে সমাধান করতে, এটাই হচ্ছে আমাদের কাজ। সমস্যা তো থাকবেই, আমাদের ১৬ কোটি মানুষের দেশ, এখানে সবসময় সমস্যা থাকবে। সমস্যার কোনো শেষ নাই’, যোগ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
এ সময় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা উল্লেখ করে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘কোভিড-১৯ এটা শুধু বাংলাদেশেরই সমস্যা না, এটা সারা বিশ্বের সমস্যা। আওয়ামী লীগ সরকার শুরু থেকেই কিন্তু মেধা দিয়ে পরিশ্রম দিয়ে এটার মোকাবিলা করে গিয়েছে। আমরা কিন্তু বসে থাকিনি। পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ সেখানে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এই করোনায়। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত ভালোভাবে তা মোকাবিলা করেছে।’
দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি অর্থনীতির দিক দিয়েও দেখি, যেহেতু আমরা প্রস্তুত ছিলাম, আমরা সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছি। সে কারণে আমাদের অর্থনীতিতে বিগত অর্থবছরের চেয়ে অগ্রগতি একটু কমেছে। তবে তাও আমাদের অর্থনীতি এখনও পজিটিভ আছে। আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে যদি আপনি ইউরোপের অর্থনীতি দেখেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দেখেন, তারা কিন্তু সবাই পিছিয়ে গেছে। কারণ তারা প্রস্তুত ছিল না, তারা তাদের মেধাবীদের কথা শুনে নাই- এই হলো যোগ্য নেতৃত্ব আর ব্যর্থ নেতৃত্বের মধ্যে পার্থক্য।’
তরুণদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘নালিশ না করে কাজ করে এই সংগঠনগুলো নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে। তারা ক্ষমতা ছাড়াই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আর এটাই হচ্ছে আমার তরুণদের প্রতি আশা। আপনারা অন্যদের প্রতি হাত পেতে রাখবেন না। সাদা চুলওয়ালা বুড়োদের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না যে, তারা কী বলে। দেশের সমস্যা সমাধান করতে নেমে যান। আমাদের দেশের মানুষের মেধা আছে। আমরা আমাদের নিজেদের মেধা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
‘আজকে আমরা আমাদের অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি করছি। আমি আমেরিকা থেকে যুক্ত হয়েছি। আমাদের সরকার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাঁচ বছর বা ১০ বছর আগে কেউ এটা কল্পনা করতে পারত বাংলাদেশে? এটা সম্ভব? কেউ কল্পনাও করতে পারত না। আজ যদি ডিজিটাল বাংলাদেশ না থাকত তাহলে আমাদের দেশের অর্থনীতি একবারে শেষ হয়ে যেত। আমাদের সরকার এটাকে বাস্তবায়ন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কিন্তু আমরা নিজেরাই বাস্তবায়ন করেছি। এটা বিদেশিরা করে দেয়নি। এটার সম্পূর্ণটা আমরা নিজেরাই করেছি’, যোগ করেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।