সুখ

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ১২:৪০ , আপডেট: ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ১২:৪২

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


আলমগীর মাহমুদ :

সবাইতো সুখী হতে চায়, কেউ সুখী হয় কেউ হয় না
জানিনা বলে যা লোকে, সত্যি কি-না!
কপালে সবার নাকি সুখ সয় না।
আশায় আশায় তবু
এই আমি থাকি
যদি আসে কোনদিন
সেই সুখ পাখি…. মান্না দে র কণ্ঠে এই সেই “সুখ”….

ঝিলংঝা বি,ডি,আর ক্যাম্প চৌধুরীপাড়া ভেটেনারী ষ্টেশনে নাজির মাষ্টারের জয়নব ফার্মেসী এলাকাবাসীর ড্রয়িং রুমের মতই। বন্ধুবাৎসল্য এলাকাবাসীর শেয়ারে গড়া প্রতিষ্টানের মতই। অবসরে আড্ডার স্থান।

সকালে রিসার্চে গিয়ে সালাম দিতেই নাজির মাষ্টার হালকা তাঁকিয়ে আরেকজনের ব্লাড প্রেসার মাপতে মাপতেই কয়”আপনারা তো সুখী মানুষ”

বুঝলাম কাজ ছাড়া, স্কুল কলেজ বন্ধ, ফ্রি তাই বলা। উনি মানুষ ও পশুর দাবাই বেঁচে সাথে বিকাশের লেনদেন। এমন ব্যস্ততায় আমারে দেখে উনি সুখী দেখার নিশ্বাস ফেলে সাথে আক্ষেপমাখাও।

জোরাজোরিতে বসছি গরম লাল চা’র কাপে ধোঁয়া। বেলা ১১ টা ছূঁই ছুঁই। ৮০ উর্ধ্বের এলাকার মুরুব্বি বদি আলম মৌলবী আসে রিসার্চে । বসাতে চাইতেই জবাব, “কোর্টে যাচ্ছি ভাই নইলে বসতাম। জমি আছে যার ঝামেলা সব তার”!

এইকথায়ে কইলাম “তারপরও আপনি ” সুখী” মানুষ ভাই ৮৫ বয়সেও আল্লাহ সুস্থতার নেয়ামতে ১৬ বছরের যুবকের মতোই পথ মাড়িয়ে কোর্টে যাবার সামর্থে সামর্থবান।

কথা ফিরিয়ে উনি কয় বেশী সুখী নাজির মাষ্টার লোকে ঔষধ কিনতে এসে সালামও দেয় টাকাও দেয়।

একটু পর পশু হাসপাতালের প্রজনন বিভাগের প্রধান শৈবাল ভাই আসে।

কৌশল বিনিময়ের ফাঁকেই উনি কইয়া বয় ” আমাদের সারাক্ষণ অফিসে থাকন লায়।আপনারা কতই না “সুখে”!

আস্তে করে কই “ভাই একসময় আমিও তাই মনে করতাম। কাজ না থাকা, না করার নামই “সুখ”। কবে বন্ধ আসবে গুণে গুণে রইতাম। বন্ধ আসলে একরাত্র বাদে একদিন পুরো ঘুমাবো তাই ভাবতাম।

করোনাকালের বন্ধ বুঝিয়ে গেল সক্ষম মানুষের কর্মহীনতা সে কত বিষাদের , কত যাতনার! কত নির্মম, নিষ্ঠুর ! অত্তুর দুশমনের জীবনও যেন না হয় এমন।

কর্মকালে সকালে কর্মে যাবার প্যান্টপরা যে কত বিরক্তিকর আক্ষেপের অনুশোচনারই ছিল । মনে লাগত চাকরীটা যদি না করন যাইত! কতইনা সুখে থাকতাম!

কর্মের পৃথিবীতে ‘পেশায়’ পৃথিবী যাপনের যে ‘সুখ’ সে সুখ আর কেইবা দেয়! চাকরীইতো আপণজনেরে আপণজন কইরা রাখে নইলে সে তো ঘরে পড়ে থাকা গোস্তপিন্ড অতি সাপ্লাইয়ে চাহিদাহীন দ্রব্য। অনাদরে সন্ধ্যায় এককাপ গরম চা” হাত বাড়িয়ে “নাও” বলা ভুলে যাওয়া পরিবেশ।

সুখ চাই সবে। খোঁজিও। ভাবনায় রয় “ও মনে হয় “সুখী” সে ভাবে “ও মনে হয় সুখী” খানিক ভাবায় গাড়ী বাড়ির অর্থবৃত্তের মালিকেরাই “সুখী”।

তাদের টেনশন ‘লোন’ ঘর বাইরের যন্ত্রনায় ঘুমের বড়িতেও যখন ঘুম পাড়ানো অসম্ভবে কাতর দেই। তখন নুতন প্রশ্ন উকি দেয় মনে ” সুখরে সুখ “হাঁচা কইরা কইনচাইন দেহি ” তুই কি জীবিত!

লেখকঃ বিভাগীয় প্রধান। সমাজবিজ্ঞান বিভাগ । উখিয়া কলেজ , কক্সবাজার alamgir83cox@gmail. com