নিজস্ব প্রতিবেদক:
নৃশংস হত্যার মহেশখালীর গৃহবধূ আফরোজার ঘাতক স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পি ও হত্যার সহযোগিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মহেশখালী ও কক্সবাজার শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। এতে অংশ নেন বিক্ষুব্ধ কয়েক হাজার লোক।

গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর মহেশখালীতে হোয়ানক টাইমবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রথম মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মহেশখালীর বিভিন্ন এলাকার সর্বস্তরের কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। সেখানে আফরোজার ঘাতক ও হত্যাকান্ডের সহযোগী হত্যা মামলার সব আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান সর্বস্তরের মানুষ।

তারা বলেন, গৃহবধূ আফরোজাকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর লাশ গুম করার জন্য উঠোনের মধ্যেই পুঁতে ফেলা হয়। এই হত্যার ঘটনা আইয়ামে জাহেলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। এই হত্যার নিয়ে পুরো দেশের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এখন পর্যন্ত একজন ছাড়া ঘাতক বাপ্পীসহ অন্য আট আসামীর কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, হত্যার পর লাশ গুম ও হত্যাকারীদের পালাতে সহায়তা করেছে পুলিশের কয়েকজন সদস্য। এটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বক্তারা বলেন, আফরোজার পরিবার অসহায় এবং ঘাতক বাপ্পীর পরিবারর রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে প্রভাবশালী। তাই আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো অপরাধীদের ছাড় না দিতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা মনে করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করে এই চাঞ্চল্যকর হত্যার মামলার আসামীদের গ্রেফতারে গাফিলতি করা হচ্ছে।

উক্ত মানববন্ধনে আফরোজার পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেন, আসামীদের গ্রেফতারে গাফিলতির বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা আমাদের পরিবারের অত্যন্ত আদরের সর্বকনিষ্ঠ আফরোজাকে হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। এরপরও আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আমরা চরম হতাশ হয়ে পড়েছি। আমরা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ঘাতক বাপ্পীসহ হত্যার সহযোগী পিতা হাসান বশির, মা রোকেয়া হাসানসহ অন্য আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।

মামলার আসামী শহীদুল ইসলাম কাজল আফরোজা হত্যার সাথে জড়িত। তার সহযোগিতায় লাশ গুম করে কতিপয় পুলিশ সদস্যকে ম্যানেজ করে ঘাতক বাপ্পীসহ আসামীরা পালিয়ে গেছেন। এমনকি তিনি আফরোজার ভাই মিজানকে প্রকাশ্যে নাজেহালও করেছে। অথচ তিনি জড়িত নেই বলে তার পক্ষে মানববন্ধন করেছে কয়েকজন সাংবাদিক ভাই।

হোয়ানকে মানববন্ধনের পর বিক্ষুব্ধ লোকজন এক বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। অন্যদিকে বিকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আরো একটি মানববন্ধন করা হয়। সেখানেও শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেন। সেখানেও একই দাবি জানান মানববন্ধনকারীরা।