আব্দুস সালাম, টেকনাফঃ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে তিন বছর সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দিয়েছেন আদালত। মামলার একই আদেশে অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৯ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সময়ে
ঢাকার বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত নং-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ মিল্লাত হোসেন এ রায় দেন। তবে এই রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে অনুপস্থিত ও পলাতক রয়েছেন।
কারাদন্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, যোহেব আলম (২৮) পিতাঃ- শফিকুল আলম,শামীমা খান পলি(৫২),স্বামীঃ- শফিকুল আলম ও শফিকুল আলম (৫৮) পিতাঃ- মোঃ আবুল হোসেন,সর্ব সাকিন ফ্লাট নং-৬বি(৭ম তলা),বাড়ি নং-৪২৬/৪২৯,মিরপুর ডিওএইচএস,রোড নং-৬,সেকশন-১২,থানা পল্লবী,জেলা ঢাকাদের প্রত্যেককে দন্ডবিডি,১৮৬০ এর অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ সংক্রান্ত ৪০৬ ধারা ও এর সাথে গঠিতব্য প্ররোচনা দেয়া সংক্রান্ত ১০৯ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৯ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেছে আদালত। দন্ডবিধি,১৮৬০ এর প্রতারণা ও প্রাণ মেরে ফেলার ভয় দেখানো সংক্রান্ত যথাক্রমে ৪১৭ ও ৫০৬ ধারার অভিযোগ থেকে আসামীদের খালাস দেয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ১৮৯৮ এর ৫৪৫ ও ৫৪৬ ধারার বিধান সাপেক্ষে অর্থদন্ডের টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা নালিশকারীকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নিদের্শ দিয়েছে আদালত। আসামীরা যেদিন আদালতে
আত্নসমর্পণ করবেন বা ধৃত হয়ে এই আদালতে উপনীত হবেন সেদিন থেকে তাদের দন্ডের সময় গণনা শুরু হবে। সাজা কার্যকরের উদ্দেশ্যে আসামীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট অভ অ্যারেস্ট যথারীতি ইস্যু করা হয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী শিফাত ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলায় বাদীসহ মোট ৪ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। মামলা দায়েরের প্রায় তিন বছর পর আদালত এ রায় দিয়েছেন।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, দুই পরিবারের পূর্ব পরিচিত ছিল। ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর বিবাহের অনুষ্ঠানের কথা ছিল। এর আগে ৩ নভেম্বর উভয় পরিবারের সম্মতিতে ১০ লাখ টাকার কাবিন ও ২০ ভরি স্বর্নালংকার দেনমোহর বাবদ টেকনাফের মেয়ে উর্বশী চৌধুরীর সাথে ঢাকা মিরপুর পল্লবী এলাকার জোহেব আলমের সাথে পারিবারকভাবে ঢাকার ধানমন্ডি ক্লাবে আনষ্ঠিকভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। বিবাহের দিন রাত্রেই শ্বশুরবাড়ি যান কনে। সেদিনই ২/৩ নং আসামী স্বর্ণালংকার নিয়ে তাকে তাদের বাসায় নিয়ে যান। বিয়ের পাঁচদিন পর বাদীর কাছ থেকে আলমীরা বা আসবাবপত্র না থাকায় ফুসলিয়ে স্বর্ণালংকারগুলো নিয়ে নেন আসামীরা। বাদীর বাবা সকল আসবাবপত্র দেয়ার পরও স্বামীর মাধ্যমে ২ নং আসামী শ্বাশুড়ির কাছে স্বর্ণালংকারগুলো ফেরত চাইলেও দেয়া হয়নি। উল্টো ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর তাকে নির্যাতন করলে বাবা-মাকে খবর দিলে ১৪ ডিসেম্বর তারা ঢাকায় যান। সেদিন তারা তাদের স্বর্ণালংকার না দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। লোকমারফত মালামালগুলো ফেরত চাইলেও তা দিতে অস্বীকার করেন। পরে আদালতে হাজির হয়ে নারী ও শিশু আইনে মামলা করেন ভূক্তভোগী।
বাদীর পিতা বলেন, এই রায় ঘোষণায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি এ রায়ের দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।