এস. এম. তারেক:
দক্ষিণ চট্টলার সর্ববৃহৎ বানিজ্যকেন্দ্র ঈদগাঁও বাজার। জেলার অন্যতম বৃহৎ এ বানিজ্যিক উপ-শহরটিতে সুদীর্ঘকাল ধরে বিরাজ করছে নানাবিধ সমস্যা। থানা কিংবা উপজেলা না হওয়ায় বাজারটিতে ব্যবসা বান্ধব উন্নত পরিবেশ নেই বললেই চলে। পাকা সেট, ভৌত ও অবকাঠামোগত সমস্যা, জলাবদ্ধতা, ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় জর্জরিত ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁও বাজারের ব্যবসায়ীরা।

বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ব্যবসায়ীদের কষ্টের সীমা থাকেনা। জলাবদ্ধতা, নোংরা জল ও কাদায় একাকার হয়ে যায় বাজারের সর্বত্র। ময়লার স্তপ পচে দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে। শুষ্ক মৌসুমেও বিরাজ করে ধুলাবালি আর অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ। যে কারনে পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলার অনেক ক্রেতা বিক্রেতা ইতিমধ্যেই এ বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। দিনে দিনে হারাচ্ছে ঈদগাঁও বাজার তাঁর সূদীর্ঘকালের ঐতিহ্য ও জৌলস। বাজারটির কাঁচা বাজারের অবস্থা খুবই শোচনীয়। দুমুঠো অন্ন আর জীবনের জন্য অপরিহার্য মৌলিক চাহিদাগুলো পূরনের নিমিত্তে এ বাজারের ব্যবসায়ীরা শত কষ্ট সহ্য করে ব্যবসা চালু রেখেছেন বলে জানান তরকারী ব্যবসায়ী নুরুল হুদা।

ঈদগাঁও বাজারের ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের দুঃখ দুর্দশার বিষয়টি গভীরভাবে উপলদ্ধি করে শ্বাসরুদ্ধকর এহেন পরিস্থিতি থেকে কিছুটা হলেও নিষ্কৃতি দিতে সঠিক সময়ে এগিয়ে এসে ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বৃহত্তর ঈদগাঁও’র কৃতি সন্তান ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তাঁর ঐকান্তিক ইচ্ছা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় বাজারের কাঁচা বাজার অংশে শ্রীঘ্রই নির্মিত হবে ৪তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভবন।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে সরকারের খরচ হবে প্রায় ৪ কোটি টাকা। কক্সবাজারের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। প্রতি তলায় শৌচাগারসহ অত্যাধুনিক সব ধরনের সুবিধাদি থাকবে ভবনটির প্রতি তলায়। ভবনটির নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে বাজারের কাঁচা তরকারী, মাছ এবং মাংস ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যসম্মত ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশে ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করতে পারবেন এবং ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারবেন। পাশাপাশি লাঘব হবে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারনের দীর্ঘদিনের দুর্দশা।

ভবণ নির্মাণের ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কক্সবাজার সদরের প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান বলেন, ভবনটি নির্মাণের জন্য এলজিইডির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই সার্ভে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। সয়েল টেস্টের জন্য নমুনাও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখন স্টেমেইড করে বাজেট প্রনয়নের পর টেন্ডার আহবান করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য রামু কক্সবাজার থেকে নির্বাচিত সাংসদ আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল, জালালাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ, মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল আজিম এবং ঈদগাঁও বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে গেছে।

জালালাবাদের ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ জানান, ভবনটি নির্মানের ব্যাপারে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ও বৃহত্তর ঈদগাঁওর কৃতি সন্তান হেলালুদ্দীন আহমদ সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরাও উনাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। আশা করছি, শ্রীঘ্রই ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নুরুল আজিম বলেন, ভবনটির নির্মান কাজ শেষ হলে বাজারের ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জায়গায় বসে কেনাকাটা এবং বেচাবিক্রি করতে পারবেন। বাজার পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজীবুল হক চৌধুরী রিকো জানান, ভবণটি নির্মিত হলে কাঁচা বাজার ব্যবসায়ীদের দুর্দশা কেটে যাবে এবং ভবন নির্মানের ব্যাপারে বাজার কমিটি প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগতা করে যাচ্ছে ।