এস এম হানিফঃ
আজ ৪ নভেম্বর। প্রথম আলোর ২২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে সবাইকে শুভেচ্ছা।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ দিনে একটি কথা ভেবে আশান্বিত হই, দেশে এখনও বলিষ্ট কণ্ঠে, সোচ্চার লেখনিতে অন্যায়-অবিচার, শোষন-বঞ্চনা, অনিয়ম-দুর্নীতির খবর তুলে আনতে একটি পত্রিকা কাজ করছে, সেটি প্রথম আলোই। আবার সারা বাংলার ইতিবাচক সংস্কৃতি ও ইতিবাচক সংবাদ তুলে আনতে প্রথম আলোর জুড়ি নেই।

প্রথম আলোর সঙ্গে আমি যুক্ত হয়েছি ২০১৩ সালের শুরুতে। ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমার প্রথম প্রতিবেদন ছাপা হয় পত্রিকাটিতে। এর আগে ২০০৭ সালের আগস্টে কক্সবাজারের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক বাঁকখালীর (তখন সম্পাদক ছিলেন আতাহার ইকবাল) মাধ্যমে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত হই। সেই থেকে প্রথম আলোতে যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত বেশ কয়েকটি জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় পত্রিকায় আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তৎমধ্যে ভোরের কাগজ, মানবজমিন, দৈনিক খবর, চট্টগ্রাম মঞ্চ, দৈনিক সাঙ্গু, দৈনিক কক্সবাজার, দৈনিক আজকের দেশ-বিদেশ, বাঁকখালী, দৈনিক চকোরী উল্লেখযোগ্য। তবে মূল সাংবাদিকতা শুরু হয় প্রথম আলোতে যোগ দেয়ার পর। সেখানে পেয়েছি মতি ভাইয়ের মতো দেশসেরা সম্পাদক আবার রানা ভাইয়ের মতো যোগ্য সহকর্মী (মূলত তিনি আমার বস, বস বললে মাইন্ড করেন বলে সহকর্মী লিখেছি)। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম অফিসের অনেক দক্ষ সাংবাদিকের সঙ্গ যেমন পেয়েছি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক আন্তরিক সহকর্মীও পেয়েছি। যাঁদের সঙ্গে আত্মার সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে পড়েছি।

এটা মূলত প্রথম আলোর জন্মদিন উপলক্ষে লেখা। এবার সেদিকে ফিরে যাই। প্রথম আলো তার প্রতিষ্ঠানের একজন সাংবাদিককে যোগ্য, দক্ষ ও পেশাদার করে গড়ে তুলতে লাখ লাখ টাকা খরচ করে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করে সাংবাদিকদের মধ্যে পেশাদারি মনোভাব যেমন সৃষ্টি করে, তেমনি একটা সংবাদ কিভাবে বস্তুনিষ্ট হয় সেটাও শেখানো হয় এসব প্রশিক্ষণে।

প্রথম আলো শুধু সংবাদ প্রকাশ করে থেমে থাকেনি, পত্রিকাটি এখন ভাষা প্রতিযোগ, ফিজিক্স অলিম্পিয়াড, গণিত অলিম্পিয়াড, ইন্টারনেট উৎসব, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সংবর্ধণা, তারুণ্যের জয়োৎসবের মতো বড় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে তরুণদের জন্য কাজ করছে। শুধু কি এসব কর্মসূচি! প্রথম আলো এসিডদগ্ধ নারীর পূর্ণবাসন, দুস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি এবং সিডর-বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজটিও করছে প্রথম আলো। এখন বোদ্ধা মহল প্রথম আলোকে শুধুমাত্র একটি পত্রিকাই ভাবছে না, তাঁরা এটিকে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দিতেও পিছপা হচ্ছেন না।

‘যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে প্রথম আলো’, ‘বদলে যাও, বদলে দাও’, ‘পথ হারাবে না বাংলাদেশ’ ‘ভালোর সাথে, আলোর পথে’ এরকম অসংখ্য অনুপ্রেরণামূলক স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশকে শক্তি সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে প্রথম আলোই। বাংলাদেশের ইতিবাচক উন্নয়নে বড় ধরণের ভুমিকা রাখছে পত্রিকাটি। মূলত প্রথম আলো সবখানে বাংলাদেশের জয় চায়। এতে সবচেয়ে বড় অনুঘটকের ভুমিকা নিচ্ছে এদেশের লাখ লাখ পাঠক।

সবশেষে বলি, প্রত্যেক রাজনৈতিক দল কিংবা ব্যক্তিবিশেষ প্রথম আলোর সমালোচনা করেন বটে। কিন্তু দিনশেষে খবরের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য প্রথম আলো পত্রিকাটিই খুঁজে নেন। বলেন, সংবাদটি প্রথম আলো ছাপছে কি না। যদি উত্তর আসে, না। তখন মনে করা হয়, কাঙ্খিত সংবাদটি সঠিক নয়। এভাবেই প্রথম আলো মানুষের মনের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছে। প্রথম আলো এখন পথহারা মানুষের পথের দিশারী। তাই বলি, আস্থা রাখি আলোয়।

এই লেখার শেষে একটি অনুরোধ, আসুন সবাই দিনে একটি করে ইতিবাচক কাজ করি। নিজে বদলাই, দেশকে বদলে দিই। ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন।

এস এম হানিফ
৪ নভেম্বর ২০২০ ইংরেজি।