শাহেদ মিজান, সিবিএন:

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার মহেশখালীর হোয়ানক আব্দুল মাবুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক (বরখাস্ত) জয়নাল আবেদীনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরের দিকে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকালে আটকের পর তার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছিলেন। মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল হাই সিবিএনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, থানার সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গ্রেফতার শিক্ষক জয়নাল আবেদীনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এজাহার মতে, ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর ও এর পরদিন দুই দফায় সপ্তম এক শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে তাতে শারীরিকভাবে যৌন হয়রানি করে। বিষয়টি নিয়ে মানসিকভাকে মানাত্মক বিপর্যস্ত হয়ে ওই ছাত্রী তার মাকে জানায়। মা প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকদের সমন্বিত একটি পক্ষ উল্টো তাকে প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগ উঠে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার লোকজন জয়নাল আবেদীনের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছিলো। তারপরও প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য ওই ছাত্রীর মা থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এদিকে, আরো বহু ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আসছে। কিন্তু সম্মান হানির ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে অভিযোগ করছে না। তিনি দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর থেকেই ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির প্রশ্রয় পেয়ে এই শিক্ষক অপকর্ম চালিয়ে এসেছিলো। এতে এলাকায় তিনি পরিমল নামে উপাধি পেয়েছেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, এই শিক্ষক নামধারী জয়নাল আবেদীন কেরুনতলী আবদুল মাবুদ উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার পর থেকেই ছাত্রীদের যৌন হয়রানি শুরু করে। বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ, ওয়াশরুম, বাথরুমসহ নির্জন স্থানে সুযোগ পেলেই বিভিন্নভাবে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতো এই জয়নাল আবেদীন। এমনি নিজে যেছে ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে পড়াতে যেতেন তিনি। বাড়িতেও ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতো বলে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে অনেক ছাত্রী বিদ্যালয় ত্যাগ অন্যত্র চলে গেছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন জানান, স্থানীয় মেম্বার আবুল হাশেম, তার চাচা কাদের বক্সু, ভাই আলম, জাগির হোসেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনসার ও কেরানী শাহাদাতসহ একটি সিন্েিডকট যৌন নিপীড়ক শিক্ষক জয়নালকে বাঁচাতে নানা দেনদরবার করেছেন। তারা বিভিন্নভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। এমনকি বরখাস্ত হওয়ার পরও তাকে পক্ষ নিয়েছে ওই সব ব্যক্তিরা। এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরও এই চরিত্রহীন শিক্ষককে আবারো বিদ্যালয়ের পদায়ন করার অপচেষ্টা করছে ওই চক্র। এতে এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে।