মোঃ নেজাম উদ্দিনঃ
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের জুমনগর এলাকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে ১০টি বসতঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে চিহ্নিত দখলদার বাহিনীর কবল থেকে প্রায় ৪ একর সরকারি বনভূমি জবর দখলমুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সোহেল রানার নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।

উচ্ছেদ অভিযানে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আবু জাকারিয়া, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম, মেহেরঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মামুন মিয়া,
বিশেষ টহল টীমের দলনেতা একেএম আতা ইলাহী ও বিভিন্ন রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ও স্টাফগণ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান প্রসঙ্গে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আবু জাকারিয়া জানান, সম্প্রতি জুমনগর এলাকায় ২০১৮-১৯ সালের স্বল্প মেয়াদী ১০ হেক্টর বাগানে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে চিহ্নিত দখলবাজরা।
বিভিন্ন সময় বনকর্মীরা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দখলদারেরা তাঁদের বাধা দেয়।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ভোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সামাজিক বনায়ন থেকে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ১০টি বসতঘর উচ্ছেদ করা হয়েছে।

তিনি জানান, সংরক্ষিত বনে কোনো অবৈধ বসতি গড়ে তুলতে দেওয়া হবে না। যেকোনো উপায়ে দখলদারদের প্রতিহত করা হবে। নেয়া হবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, বন বিভাগের জমি দখলদার ও বন ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। দখলবাজদের ছাড় দেওয়া হবেনা।

বন কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের সূত্র থেকে জানা গেল, সরকারি বনভূমি দখল, বালি উত্তোলনসহ সব জবর দখলকাজে একটি প্রভাবশালী মহল জড়িত রয়েছে। দখলবাজির সাথে সরকারি দলের কয়েকজনের নামও উঠে এসেছে।

পাওয়া তথ্যমতে, খুটাখালীর মধুশিয়া এলাকায় আনোয়ার মেম্বার, নূর মোহাম্মদ পেটান, সাইফুল ইসলাম, মিন্টু, লিটন, ফারুক, বেলাল, রাশেদ, আবদুশ শুক্কুর, শাহজালালসহ অন্তত ২০ জনের একটি সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে।

মেধা কচ্ছপিয়া এলাকায় জিল্লুর রহমান, আবদুল মান্নান, ওসমান গনিসহ ১০/১৫ জনের প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বালি উত্তোলন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে।

এছাড়া ফুলছড়ি ছরা থেকে আব্দুস শুক্কুর, ওসমান আলী মোরশেদ, নুরুল আবছার, কালা সোনা, দেলোয়ার হোসেন, লুতু, রমজানসহ একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলবাজি ও বালি উত্তোলন করছে। সরকারি বনভূমি দখল ও বিক্রি করে অনেক টাকার মালিক বনেছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা। তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসবে দখলদারদের অপকর্মের অজানা কাহিনী।

এর আগে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হলেও তারা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বালি উত্তোলন ও অবৈধ দখলবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।

সরকারী বনভূমি দখলদারদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।