এম.এ আজিজ রাসেল :
২/৩ ধরে বৃষ্টিতে শারদীয় দূর্গা পূজান আনন্দে ভাটা পড়ে। মহাঅষ্টমীতে আকাশের মন ছিল অনেকটা ভাল। আর মহানবমীতে বৃষ্টির প্রভাব না থাকায় শহরের পূজা মন্ডপগুলোতে দর্শনার্থী ও পূজারিদের ভিড় বাড়ে। পূজার শেষ দিনে মা দূর্গার চরণে সবাই করোনা মহামারী থেকে মুক্তি চেয়েছে।
রবিবার (২৫ অক্টোবর) শহরের বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে ঘরবন্দি থাকা দর্শনার্থী ও পূজারিরা সকাল থেকে মন্ডপে মন্ডপে ভিড় জমান। রংবেরঙের পোশাকে সজ্জিত সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের ভিড়ে অনেক মন্ডপেই কিছুটা উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে। সকালেই পূজা শেষে ভক্ত-অনুরাগীরা মহানবমীর অঞ্জলিতেও অংশ নিয়েছেন।
উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। তবে বাঙালির মনে দুর্গাপূজা সবসময়ই যেন উৎসবের আমেজ।
শহরের গোলদিঘির পাড়স্থ ইন্দ্রসেন দুর্গা বাড়িতে আগত শ্রাবন্তী রায় কোলের শিশুকে দেখিয়ে বলেন, আমার ছেলের এটাই প্রথম পূজো, ওকে এখন থেকেই বোঝাতে চাই। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি বলেই আর বাড়ি বসে থাকতে চাই না। তার উপর আজ নবমী, এ দুর্গোৎসবের জন্য আবার এক বছরের অপেক্ষা। তাই চলে এলাম।
শুধু ঘোরাঘুরি নয়, মন্ডপের সামনে নিজেদের স্মৃতি ধরে রাখতে অনেকে ছবিও তুলেছেন ইচ্ছে মাফিক। ক্যামেরার ক্লিক তো রয়েছে সেই সঙ্গে দেবী দুর্গাকে সাথে নিয়ে সেলফি তুলতেও ভোলেনি দর্শনার্থীরা।
লালদিঘির পাড়স্থ সরস্বতি বাড়িতে আসা সুমা ভট্টাচার্য্য জানান, এবারে আজকেই প্রথম এলাম মন্ডপে। আজকের দিনটা চলে গেলেই আবার গোটা এক বছরের অপেক্ষা। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মন্ডপের সামনে একটা ছবি তুলে রাখলাম। এটা তো একটা ভালো স্মৃতি। মাঝে মধ্যে এগুলো দেখেই সময় কাটানো যায়।
নবমীতে মন্ডপে ভিড় হয় সবচেয়ে বেশি। কেন না একদিন পরেই মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যাবেন দেবীদুর্গা। তিনি পেছনে ফেলে যাবেন ভক্তদের চার দিনের আনন্দ-উল্লাস আর বিজয়ার দিনের অশ্রু। নবমী রাত তাই বিদায়ের অমোঘ পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয়। তবে জরাজীর্ণতা কাটিয়ে মা দুর্গা আবারো আসছে বছর ফিরবেন, এ প্রত্যাশাতেই সবার প্রশান্তি।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড রণজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা বলেন, সোমবার (২৬ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় শোভাযাত্রাবিহীন বিশে^র দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। কিন্তু সেখানে আনুষ্ঠানিক কোন অনুষ্ঠান করা হবে না। এবার সৈকতে শুধু রামু, উখিয়া, সদর উপজেলা ও কক্সবাজার পৌর শহরের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। বাকিরা স্ব স্ব উপজেলায় প্রতিমা বিসর্জন দেবে। বিসর্জনে পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন।