পেকুয়া প্রতিনিধি :

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মারপিটের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে নুরুল আলম (৬৫) নামে এক আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রাতে তার অপর ভাই কাঠ ব্যবসায়ী নুর আহমদকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ।

ধর্ষণের ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবী করে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ চেয়ে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার। এছাড়াও থানার দালাল নেজাম উদ্দিনের মিথ্যা কথায় ধর্ষণ মামলাটি রেকর্ড করায় পুলিশের এহেন কর্মে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিক্ষোভকারীরা।

পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউপির পাহাড়িয়াখালী এলাকায় বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় দুই মহিলার মধ্যে মারপিটের ঘটনাটি ঘটে।।ওই ঘটনার সূত্র ধরে শুক্রবার ধর্ষণ মামলাটি রেকর্ড হয়।

ঘটনার ভুক্তভোগী ওয়ার্ড আ’লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসতবাড়ির জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমাদের বাড়ির এক মহিলা ও চাচাতো ভাইয়ের পরিবারের এক মহিলার মধ্যে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ ১০বছর ধরে আমাদের মধ্যে ভিটের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি তারা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রবাসী কাশেমের স্ত্রী রুজিনা আক্তারকে ভিকটিম সাজিয়ে পেকুয়া সদরের নেজাম নামে থানার এক দালালের মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। একই সাথে রাতেই পুলিশ দিয়ে আমার ভাই নুর আহমদকে গ্রেফতার করিয়েছে। এমন ঘটনায় আমরা মর্মাহত ও হতবাক। মারপিটের ঘটনায় এদিক সেদিক করে মামলা হতে পারে। কিন্তু জঘন্য মিথ্যা দিয়ে ও অন্য পুরুষ দিয়ে ভিকটিমের ইজ্জত হরণ করে মামলা দায়ের করার বিচার মহান আল্লাহ অবশ্যই করবেন।

এ ঘটনায় স্থানীয় সমাজ সর্দার আবু তাহের, মৃত ফকির মুহাম্মদের ছেলে জয়নাল আবদীন, মৃত মতিউর রহমানের পুত্র নুরুল কবির,মৃত জেবর মুল্লুকের ছেলে বদিউল আলম বলেন, যখন দুই মহিলার মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে তখন নুরুল আলম মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন আর নুর আহমদ বাজারে ছিলেন। আমরা জানতে পেরেছি ঘটনাটি মারপিট ও হাতাহাতির। ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি।

রেজাউল করিমের স্ত্রী মুবিনা আক্তার, ছমি উদ্দিনের স্ত্রী সাহেনা আক্তার, ছাত্রী সাদিয়া আক্তার, কলি আক্তার বলেন, দুই বাড়ির মহিলার মধ্যে ভিটের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধ নিয়ে বৃহস্পতিবার মারপিটের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের মত জঘন্য কোন ঘটনা ঘটেনি। রুজিনা পেকুয়া থানার ওসিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলাটি রুজু করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ট তদন্ত দাবী করছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য এম. এনামুল হক বলেন, নুরুল আলম ও তার জেঠাতো ভাই কাশেম গংয়ের মধ্যে জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানতে পারি তাদের দুই পরিবারের মহিলাদের মধ্যে ওই ঘটনায় মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। রাতে জানতে পারি কাশেমের স্ত্রী রুজিনা আক্তার থানায় প্রবীণ আ’লীগ নেতা নুরুল আলমের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা জমা দিয়েছে। একই রাতে তার অপর ভাই নুর আহমদকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধর্ষণের ঘটনাটি শুনার পর আমরা সমাজের বেশ কয়েকজন লোক তদন্ত করি। ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে আমরা জানতে পারি। স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ ঘটনাটি সঠিকভাবে তদন্ত করে আসল দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। আর মিথ্যা ঘটনায় আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

পেকুয়া থানার ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ভিকটিম মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ করায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। যদি তদন্তে ধর্ষণের ঘটনা মিথ্যা হয় তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।