শাহেদ মিজান, সিবিএন:

কক্সবাজারের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টের সেই ৫২ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় প্রশাসনের লোকজন সেখানে উচ্ছেদ অভিযানে যান। কিন্তু নির্দেশ দেয়ার পরও মালামাল সরায় অধিকাংশ দোকানদার। অন্যদিকে নানাভাবে আকুতি জানান অবৈধ দখলদারারা। তাই শেষ মুহূর্তে আজ রাতের মধ্যে মালামাল সরানোর শর্ত দিয়ে কোনো দোকান উচ্ছেদ করেনি। মালামাল সরানোর আগামীকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় উচ্ছেদ করা হবে এসব দোকান।

অভিযান শেষে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব আবু জাফর সাদেক সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

কক্সবাজার সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার মোক্তার জানান, উচ্ছেদ কার্যক্রমে চরমভাবে বাধা দিতে চেষ্টা করে অবৈধ দখলকাররা। ভাড়া করা লোকজন নিয়ে এসে অবৈধ দখলদার ও দোকান মালিকরা সেখানে অবস্থান এবং প্রশাসনের উচ্ছেদ দলের মুখোমুখি হয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। অন্যদিকে মালামালও সরায়নি। তাই আজ রাতের মধ্যে মালামাল সরিয়ে ফেলতে দোকান সমিতি মুচলেকা নিয়ে অভিযান স্থগিত রাখা হয়। তবে নির্দেশ মতে আগামীকাল সকাল ১০টায় অভিযান শুরু হবে।
তিনি আরো জানান, দুপুর ১২ টার দিকে সুগন্ধা পয়েন্টে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। উচ্ছেদের আগে দোকানদারদের ঘন্টাখানেক সময় দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নিজেদের মূল্যবান মালামাল সরিয়ে নিতে পারে। এবিষয়ে সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হয়।

সূত্র মতে, গত ১ অক্টোবর সমুদ্র সৈকতের কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২ জনের স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের দেওয়া রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

ফলে ওই ৫২ ব্যক্তির স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো বাধা না থাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে সুগন্ধা পয়েন্টের এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়।

জানা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্সধারী ব্যক্তিরা পরিচালনা করে আসায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল উচ্ছেদের নোটিশ দেয়। পরে জসিম উদ্দিনসহ ৫২ জন একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন।

এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ শুনানি শেষে হাইকোর্টের রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে রায় দেন।