সিবিএন ডেস্ক:
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সুগভীর, বহুমাত্রিক ও রক্তের অক্ষরে লেখা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে আসা ভারতের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। তথ্যসচিব কামরুন নাহার ও মন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম ও অতুলনীয়, যার সঙ্গে অন্য কোনো দেশের সম্পর্কের তুলনা চলে না। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক রক্তের অক্ষরে লেখা, কারণ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছেন। আমাদের এক কোটি মানুষকে ভারত সরকার আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, তত দিন এই ইতিহাসের পাতায় এটি লিপিবদ্ধ থাকবে।’

বৈঠকের ওপর আলোকপাত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় চলচ্চিত্রকার শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্রটি মুজিববর্ষের মধ্যেই সমাপ্ত করার পরিকল্পনা এবং বাংলাদেশি পরিচালক ও ভারতীয় সহপরিচালকের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধের ওপরে যৌথভাবে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।

ভারতের ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিটিভি ও বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখা গেলেও পশ্চিমবাংলাসহ সমগ্র ভারতে দেখার ব্যবস্থা করা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, একইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে যাতে উভয় দেশ উপকৃত হয় বিশেষ করে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো যাতে চট্টগ্রাম বন্দর সহজে ব্যবহার করতে পারে, সেখানে সড়ক ও রেল সংযোগ যাতে দ্রুত চালু হয়, সে বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

একইসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে সাংবাদিকদের সফর বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ আদান-প্রদানসহ গণমাধ্যম খাতের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও চলচ্চিত্র আমদানি-রপ্তানি নিয়েও আলোচনার কথা জানান ড. হাছান। তিনি বলেন, নতুন ভারতীয় হাইকমিশনার খানিক বাংলাও বলতে পারেন।

ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেওয়াই তাঁর লক্ষ্য।

ধর্ষণ অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোরতম অবস্থানে সরকার

সাংবাদিকরা এ সময় ধর্ষণ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বিধান রেখে আইন সংশোধনের বিষয়ে বিএনপির নেতিবাচক মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনার কথা অনুযায়ী বিএনপি যে বক্তব্য রেখেছে, তাতে প্রশ্ন জাগে- তাহলে কি আইন সংশোধনটা বিএনপির পছন্দ হয়নি! সরকার ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রেখে আইন সংশোধন করেছে এটি দমনের জন্য, কারণ আপনারা জানেন বাংলাদেশে যখন এসিড নিক্ষেপ বেড়ে গিয়েছিল, তখন সেটির কঠোর শাস্তির বিধান রেখে আইন করার পর তা আর প্রায় ঘটেই না।’

শুধু আইন সংশোধন করার মধ্যেই আমাদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রাখব না, বিচার যাতে দ্রুত হয়, সেটির ওপরও সরকার গুরুত্বারোপ করছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বাস্তবতার নিরিখে বলেন, ‘এসবের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিনোদন প্লাটফর্মগুলোতে আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং সমাজের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো উপাদান যদি এই ব্যাধি ছড়ানোতে ইন্ধন দেয়, সেগুলোর ব্যাপারেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’