মো: ফারুক , পেকুয়া  প্রতিনিধি :

চাচাতো ভাই ছালেহ জঙ্গি ছোটনের কিরিচের কোপ ও গুলিতে নির্মমভাবে খুন হন শিক্ষক এস.এম ফরহাদ উদ্দিন। পেকুয়া সদর ইউপির আবদুল হামিদ সিকদার পাড়ার মৃত নুর আহমদের ছেলে ছালেহ জঙ্গিই ওই ঘটনার একমাত্র আসামী। দীর্ঘ প্রায় ৬বছর শেষ হতে চললেও এ আসামী পুলিশের হাতে একবারের জন্যও গ্রেফতার হয়নি, জামিনও নেননি আদালত থেকে।
গত ২০১৫ সালের ৬ মে (বুধবার) রাত ১০টার দিকে পেকুয়া সদর ইউপির আবদুল হামিদ সিকদার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত এস.এম ফরহাদ উদ্দিন একই এলাকার শিক্ষক মোঃ ইউনুছের ছেলে।

এছাড়াও কথিত প্রেমিক ওমর ফারুকের হাতে নির্মমভাবে খুন মাদ্রাসা ছাত্রী আয়েশা বেগম। মগনামা ইউনিয়নের মিয়াজী পাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক ছাড়াও ওই মামলায় আরো তিনজন আসামী রয়েছে। এক বছর শেষ হতে চললেও প্রধান আসামী ফারুককে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ, জামিনও নেননি আদালত থেকে।

গত ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) অপহরণ পূর্বক খুন করার আগে দুই চোখ উপড়ে ফেলার সাথে সাথে বাম কান কেটে নেন এ খুনি। তার পরের দিন মগনামা ইউপির বিসমিল্লাহ সড়কের এক পাশ থেকে তার লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আয়েশা বেগম একই ইউপির জামাল উদ্দিনের মেয়ে ও মাঝির পাড়া শাহ রশিদিয়া মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ দুই ঘটনার পরপর পেকুয়াসহ পুরো জেলায় সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায়। খুনিদের গ্রেফতারে মানববন্ধনসহ সংবাদ সম্মেলন করে পরিবারের পক্ষ থেকে। থানায় পৃথক পৃথক মামলা রেকর্ড হলেও থানা পুলিশের ব্যর্থতায় ঘাতক দুই খুনিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে খুনিদের গ্রেফতারে পুলিশ উদাসিন ছিল। যার কারণে নির্মম এ দুই ঘটনার আসামী গ্রেফতার হয়নি। আস্তে আস্তে হাওয়ায় মিলে গেলো দুই খুনি। দীর্ঘদিনেও খুনি গ্রেফতার না হওয়ায় সন্তান হারানোর দুঃখ বয়ে বেড়াচ্ছে এ দুই পরিবার।

আরো জানা গেছে, আসামী গ্রেফতার বা আদালতে হাজির না হলেও বিজ্ঞ আদালতে ফরহাদ হত্যা মামলার বিচার কাজ চলছে। আয়েশা হত্যা মামলা সিআইডির হাতে রয়েছে। পেকুয়া থানা পুলিশের ব্যর্থতায় মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি বরাবর মামলাটি হস্তগত হয়।

নিহত এস.এম ফরহাদের পিতা মো: ইউনুছ ও মাতা রাহেলা মুস্তারী বলেন, সেই দিনের ভয়ংকর জীবনের কথা তারা এখনো বুলতে পারেনি। পারেনি ছেলে হারানো দুঃখ আর যন্ত্রনা। হত্যাকান্ডের প্রায় ৬মাসের কাছাকাছি সময় অতিবাহিত হলেও খুনি পুলিশের হতে আটক না হওয়ায় তাদের পরিবারে শুধুই কান্না আর কান্না।

তারা আরো বলেন, মামলা হল এসপি, এসপি সার্কেল ও পেকুয়া থানা পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দার লোকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করল। আসামীকে দ্রুত আটক করা হবে বলে শান্তনা দিল। সেই শুরু সেই শেষ। আটক করতে পারেনি খুনি ও এজাহার নামীয় আসামীদের। নিহত ফরহাদকে তারা আর ফিরে পাবেনা এমন মন্তব্য করে তাদের চাওয়া একমাত্র আসামী যেন আটক হয়।

মাদ্রাসা ছাত্রী নিহত আয়েশা বেগমের পিতা জামাল উদ্দিন বলেন, তারা খুব অসহায় পরিবার। ওই ঘটনায় মামলা হল কিন্তু এক বছরেও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় দুঃখই রয়ে গেল। নির্মম এ হত্যাকান্ডের প্রধান আসামীকে গ্রেফতারে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেছেন পিতা জামাল উদ্দিন।

ছাত্রী নিহতের ঘটনায় মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, আয়েশা নিহত হওয়ার পর প্রধান আসামীকে আটকে পুলিশের তেমন তৎপরতা ছিলনা। আইন শৃংখলা সভায় এ আসামীকে আটক করার জন্য বেশ কয়েকবার বলেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আশা করবো মামলা যেখানে অথবা যেভাবেই থাকুক আসামী আটকে পুলিশ ভূমিকা রাখকে।