স্পোর্টস ডেস্ক:
শুক্রবার শুরু হয়েছে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের খেলা। প্রথমদিন ন্যুনতম ব্যবধানে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে, ড্র হয়েছে প্যারাগুয়ে-পেরুর ম্যাচ। তবে দ্বিতীয় দিন এসবের ধার ধারল না ব্রাজিল। পরিষ্কার ব্যবধানে উড়িয়ে দিল প্রতিপক্ষ বলিভিয়াকে।

শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোরে হওয়া ম্যাচে ব্রাজিলের উজ্জীবিত ফুটবলের সামনে পাত্তাই পায়নি বলিভিয়া। রবার্তো ফিরমিনো, নেইমার জুনিয়র, ফিলিপে কৌতিনহোদের উদ্ভাসিত পারফরম্যান্সে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ব্রাজিল। যা তাদের বসিয়েছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।

দলের বড় জয়ে জোড়া গোল করেছেন লিভারপুলের ফরোয়ার্ড রবার্তো ফিরমিনো। এছাড়া একবার করে স্কোরশিটে নাম তুলেছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড কৌতিনহো এবং প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ডিফেন্ডার মার্কুইনহোস। অন্যটি ছিল আত্মঘাতী গোল। ম্যাচে গোলের দেখা না পেলেও জোড়া এসিস্টে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন নেইমার।

নিজেদের ঘরের মাঠের ম্যাচটিতে পরিষ্কার ফেবারিট ছিলো তিতের ব্রাজিলই। নিজেদের আধিপত্যের প্রমাণ দিতে একদমই সময় নেননি নেইমার-ফিরমিনোরা। যদিও প্রথম গোলটি করেছিলেন ডিফেন্ডার মার্কুইনহোস। ম্যাচের ১৬ মিনিটের সময় দানিলোর মাপা ক্রসে ছয় গজের বক্সের মুখে দাঁড়িয়ে সহজ হেডে দলকে এগিয়ে দেন পিএসজি ডিফেন্ডার।

দ্বিতীয় গোল পেতে অপেক্ষা খুব একটা লম্বা হয়নি। এবার দৃশ্যপটে হাজির হন আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা। ম্যাচের বয়স যখন আধঘণ্টা হয়েছে, তখন সাজানো গোছানোর আক্রমণের নজির দেখান নেইমার-ফিরমিনোরা।

পেনাল্টি এরিয়ার মধ্যে খালি জায়গায় থাকা লোদির উদ্দেশ্যে বল বাড়ান নেইমার। সেখান থেকে আরও সামনে থাকা ফিরমিনোকে বাড়িয়ে দেন লোদি। তখন স্রেফ পা ছোঁয়ানো ছাড়া আর কিছুই করতে হতো না ফিরমিনোকে। যা খুব সহজেই করেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড। ব্রাজিল এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।

ম্যাচের প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। তবে বলিভিয়ার সঙ্গে নিজেদের পার্থক্যটা স্পষ্ট করে দিয়েছিল ব্রাজিল। প্রথম ৪৫ মিনিটের মধ্যে প্রায় ৩৬ মিনিট বলের নিয়ন্ত্রণ ছিলো ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের পায়েই। এসময়ের মধ্যে একবারের জন্যও আক্রমণে উঠতে পারেনি বলিভিয়া, শুধু সামলে গেছে নিজেদের রক্ষণ।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যেই নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ফিরমিনো। এবার স্কয়ার পাসে তাকে ডি-বক্সের মধ্যে বল এগিয়ে দেন নেইমার। প্রথম গোলের মতো এবারও ঠাণ্ডা মাথায় পা ছুঁইয়ে ব্যবধান ৩-০ করেন সুযোগসন্ধানী ফিরমিনো।

বলিভিয়ার বিপদ আরও বাড়ে ম্যাচের ৬৬ মিনিটের সময়। পেনাল্টি এরিয়ার মধ্যে বল পেয়ে বাইলাইন বরাবর এগুচ্ছিলেন কৌতিনহো। হঠাৎ থেমে ছোট্ট ক্রস বাড়িয়ে দেন নেইমারের উদ্দেশ্যে। তবে সেটি ইচ্ছে করেই ধরেননি নেইমার, যে কারণে বোকা বনে যান ডিফেন্ডার কারাসকো। এ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগেই বল জড়িয়ে যায় জালে, আত্মঘাতী গোলে হালি পূরণ হয় ব্রাজিলের।

প্রায় ১১ মাস পর খেলতে নেমে এক হালি গোলে সন্তুষ্ট ছিল না ব্রাজিল। তাই মিনিট সাতেক পর আরও একবার বলিভিয়ার জাল কাঁপায় তারা। নেইমারের বুদ্ধিদীপ্ত ক্রসে বলিভিয়ার দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে লাফিয়ে উঠে করা হেডে ম্যাচের শেষ গোলটিতে নিজের নাম লেখান কৌতিনহো।

দিনের অন্য ম্যাচে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছে কলম্বিয়া। জোড়া গোল করেছেন লুইস ফার্নান্দো মুরিয়েল ফুটো এবং অন্য গোলে পা ছুঁইয়েছেন দুভান জাপাতা। তারাই এখন পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।

ব্রাজিল একাদশ: ওয়েভারটন, রেনান লোদি, মারকুইনহোস, থিয়াগো সিলভা, দানিলো, ফিলিপে কৌতিনহো, ক্যাসেমিরো, ডগলাস লুইজ, নেইমার, রবার্তো ফিরমিনো এবং এভারটন।

ব্রাজিল সাবস্টিটিউট: এডেরসন, আদেরবার সান্তোস, অ্যালেক্স তেলেস, রদ্রিগো সাইও, ফেলিপে, ফাবিনহো, ব্রুনো গুইমারেস, রিচার্লিসন, ম্যাথিউন কুনহা, এভারটন রিবেইরো, রদ্রিগো এবং গ্র্যাব্রিয়েল মেনিনো।

বলিভিয়া একাদশ: কার্লোস লাম্পে, হোসে সাগ্রেদো, হোসে কারাসকো, হেসুস সাগ্রেদো, হুয়ান গ্যাব্রিয়েল ভালভার্দে, ব্রুনো মিরান্ডা, অ্যান্তনিও বুস্তামান্তে, ডিয়েগো আয়ার, ক্রিশ্চিয়ান আরাবে, ফার্নান্দো সালদিয়াস এবং সিজার মেনাকো।

বলিভিয়া সাবস্টিটিউট: রুবেন কোরদানো, জিমি রোকা, লেওনার্দো জাবালা, গুইমার জাস্টিনিয়ানো, লুইস বানেগাস, রুডি কারদোজো, ঝাসমানি কাম্পোস, ফ্রাঞ্জ গঞ্জালেজ, কার্লোস এনরিক আনেজ, বরিস সেসপেদেস এবং কার্লোস সাউসেদো।