প্রেস বিজ্ঞপ্তি :

গত ৭ অক্টোবর কক্সবাজার জেলার আওতাধীন ১৮ টি শাখা কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এসব কমিটিতে ত্যাগীদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকার বিনিময়ে ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিবাহিত, ইয়াবা ব্যবসায়ী, অছাত্র ও আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকাহীন লোকজনকে কমিটিতে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ বঞ্চিতদের।

এর প্রতিবাদে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় কক্সবাজার শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বঞ্চিতরা। জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহীদ স্মরণীস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। এতে পদবঞ্চিত ছাত্রদলের কর্মীরা অংশ নেয়। এসময় বিক্ষোভে হোসাইন মাদু, ওসমান সরওয়ার টিপু, রেজাউল করিম, আব্দুল হামিদ ও নজরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

তারা বলেন- জেলা কমিটির অধীনে সম্প্রতি ঘোষিত ১৮ টি শাখার আহ্বায়ক কমিটিতে ৯০ শতাংশ বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিল না। কোন সময় পার্টি অফিসে দেখা যায়নি এমন লোককেও কমিটিতে রাখা হয়েছে। অধিকাংশই অছাত্র ও বিবাহিত। শুধুমাত্র জেলা ছাত্রদলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুর রহমান নয়ন ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুল আলম তাদের পকেট ভারী করার জন্য কমিটি নিয়ে নয়ছয় করেছেন। আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা অনেকেই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।

তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর কক্সবাজার শহর শাখা, সদর উপজেলা শাখা, সরকারি কলেজ শাখা, কক্সবাজার সিটি কলেজ শাখা, রামু কলেজ শাখা, মহিলা কলেজ শাখা, ঈদগাঁও ফরিদ আহমেদ ডিগ্রি কলেজ শাখা, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি শাখা, কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল মাদ্রাসা, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, উখিয়া উপজেলা, টেকনাফ উপজেলা, টেকনাফ পৌরসভা, উখিয়া কলেজ, টেকনাফ সরকারি কলেজ, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

বঞ্চিতদের মধ্যে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৬ বছর ধরে ছাত্রদলের সাথে যুক্ত। রাজপথের প্রতিটি মিছিল সংগ্রামে ছিলাম। কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রাখা হয়েছে কাউসার হাবিব ত্বকী নামে একজনকে। সে ছিল শহরের একটি ইউনিট কমিটির কর্মী। সরকারি কলেজের মিছিল মিটিংয়ে তাকে কখনো দেখা যায়নি। সে সরকারি কলেজের ছাত্র কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। একইভাবে কমিটিতে রাখা কেউই ছাত্রদলের ডেডিকেটেট কর্মী নয়। এই কমিটি আমরা বাতিল চাই।’

হোসাইন মাদু বলেন, ‘কক্সবাজার শহর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিতে যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে দুয়েকজন ছাড়া বাকিরা সবাই অপরিচিত। তাদের শহর কমিটিতে আসার যোগ্যতা নেই। স্বজনপ্রীতি ও টাকার বিনিময়ে তাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। শহর শাখার মত পুরো ১৮ কমিটিরই একই অবস্থা। এসবের মূল নায়ক হচ্ছে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুর রহমান নয়ন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিজানুল আলম। এই বৈষ্যমের কারণে প্রকৃত জিয়ার সৈনিকেরা মর্মাহত। দ্রুত এই কমিটি বাতিল চাই।’

শহর ছাত্রদলের নেতা ওসমান সরওয়ার টিপু বলেন, শহর শাখা কমিটিতে হুমায়ুম কবির হিমু নামে যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে তার রাজপথে কোন চিহ্ন নেই। যাদের পদবঞ্চিত করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই মামলা-হামলার আসামী। রাজপথে তাদের রক্ত ঝরেছে। যাদের কমিটিতে আনা হয়েছে তাদের মধ্যে দুয়েকজন ছাড়া বাকি কারোরই রাজপথে পায়ের ছাপও নেই। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে ভুল বুঝিয়ে টাকার বিনিময়ে কমিটি নিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে। দ্রুত কমিটিগুলো বাতিল না করলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

বঞ্চিতদের দাবী, কক্সবাজার শহর শাখার আহ্বায়ক কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে মো. কায়সারকে। তিনি একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী।