শফিকুল ইসলাম নয়ন (আবির)

স্বাধীনতার চার যুগ পরে এসেও আজ আমাদের দেশের নারীরা স্বাধীনভাবে একা বের হতে সাহস পায়না। কিভাবে বের হবে?
একা পেলেই যে সেদিন টেলিভিশন বা পত্রিকায় হেডলাইন হয়ে যাবে। স্বাধীনতা পেয়েছি ঠিকই” তবে রক্ষা করতে পারিনি। হায়েনা নরপশুতে ছেয়ে গেছে পুরো দেশ।

ইদানীং কভিড-১৯ এর চেয়ে দেশের কতগুলো কুলাঙ্গারে একটি ভয়ংকর রোগ সৃষ্টি হয়েছে। ধর্ষণ। এটির প্রতিরোধ নেই। আছে প্রতিকার। মৃত্যু। তবে দুঃখের বাক্যটি হলোঃ যাদের হাতে এটার মেডিসিন আছে তারা প্রয়োগ করছেনা। কিন্তু কেন? আমরা তো প্রতিকার চাই, চাই মৃত্যু। তবে আপনারা কেন প্রতিরোধ করে করে সুযোগ দিচ্ছেন?
আর কত?

অনেক ঘটনা আড়ালেই থাকে। সোস্যাল মিডিয়াতে দেখা মিললেই হৈচৈ-লিখালিখি শুরু করে দিই!

বলি কি,
ধর্ষণের/নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় স্টাটাস দেওয়াতে কোনো কাজে আসবেনা।প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে ঘর থেকে।

আজকের সমাজে নারীরা এতটাই অসহায় হয়েছে যে, পুরুষের হাতে গৃহিণী নির্যাতনে শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত ! সেটা যৌতুকের দায়ে হোক কিংবা তরকারি স্বাদ না হওয়া থেকে শুরু করে আরো কত কারণ অকারণে তার হিসেব নেই।

ছেলের হাতে মা খুন হচ্ছে,
সেবিকা কাজের মেয়ের ধর্ষণ হচ্ছে, অফিসে কর্মরত একজন নারীর চাকরি ঠিকিয়ে রাখার অভিযোগ বা বাহানা দিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। আর কত কু-প্রস্তাব পাচ্ছে তা লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে যায়।

ছয় মাসের শিশু থেকে শুরু করে সত্তর বছরের বৃদ্ধারাও আজ এ দেশে ধর্ষণে শিকার!
আমার দেশ স্বাধীন, তবে আমার দেশের নারীরা স্বাধীন না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি, প্রতিনিয়ত হাজারটা অপরাধে লাইসেন্স দিচ্ছে।
কথাটা শতভাগ সত্যি।

দেশে আইনে আছে, তবে আইনের সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে-কিনা সেটার কথা জনতায় বলবে, বলতেছে আর বলুক। তাতে কি যায় আসে?

এ দেশে সঠিক বিচার কবে হয়েছে শুনি?
বিগত সাল থেকে এই সালে যা নির্মম ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ফ্লাশ হয়েছে তার কি আদৌ বিচার হয়েছে?

এমনও আছে এখনো পর্যন্ত অনেক মামলার শুনানি পর্যন্ত হয়নি, এদিকে পুরা বৎসর পেরিয়ে যাচ্ছে।
বিচার হয়নি একযুগে পা দিয়েও।

ধর্ষকদের এতো কিসের বিচার?
কিসের যাচাই-বাছাই, কিসের ইনভেস্টিগেশন?
সরাসরি জনসম্মুখে গোপনাঙ্গ কেটে ফেলার আইন-কেন কার্যকর হচ্ছেনা?
কেন হচ্ছেনা?
আর কত্ত ধর্ষণের হেডলাইন পড়বো আমরা?
কাল আমার মা, আমার বোন বা আপনার স্ত্রী ও টার্গেট হতে পারে।

ঐ-যে একটা কথা উল্লেখ করলাম নাহ,
বিচারহীনতার সংস্কৃতি, প্রতিনিয়ত হাজারটা অপরাধে লাইসেন্স দিচ্ছে।

হ্যা দিচ্ছে।
আর সেই লাইসেন্স ব্যবহার করে বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ, অত্যাচার, নারী নির্যাতন,যৌন সহিংসতা, শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং এইসবের মাত্রা দিন দিন আকাশ ছোঁয়া হয়ে যাচ্ছে।

আজকে সোস্যাল মিডিয়ায় কোনোকিছু লিখতে সংশয় জাগে। এই জন্যই যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যদি আমিই টার্গেট হয়েছে যায়!

ধর্ষক কোনো দলের হতে পারেনা, কোনো ক্ষমতা বা বলের হতে পারেনা। ধর্ষক হতে পারেনা স্বাধীন দেশের নাগরিক। ওরা যদি এই পবিত্র রক্তে স্নানিত দেশের নাগরিক হয় তাহলে আমার আর ধর্ষকের মধ্যে তফাৎ কি?
নাগরিক একজনেরই থাকবে। আমার না হয় ধর্ষকের।

গতকালের নোয়াখালীর ঘটনাটি জনসম্মুখে আসছে ৩২দিন পর।
তবে এতোদিন কেন আসেনি? পুরা এলাকায় চুপ ছিল কেন?
ভুক্তভোগীগন চুপ থাকার মানে এটাই দাড়ায় তারাও আইনের প্রতি নির্ভরতার হারিয়ে ফেলেছে।

তবে প্রথমত আমাদের চুপ থাকা এড়াতে হবে।
আওয়াজ তুলতে হবে।র‌্যাপিড আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
এমন শাস্তির বিধান তৈরী করতে হবে যাতে আর কোনো নরপশু এমন ঘৃন্যতম কাজ করতে সাহস না পায়। নিজ নিজ অবস্থান কঠোর হতে হবে।

আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
আমরা সঠিক শাস্তির বিধান চাই। চাই স্বাধীন দেশের নারীর নিরাপত্তা। চাইনা আর পুরুষ পরিচয় দিয়ে লজ্জাবোধ।

Please Stop Rape 🙏