এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার এমজিএসপি প্রকল্পের কাজের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে আধুনিকমানের মিক্সার অটো মিনি প্লান মেশিনের পরে এবার চকরিয়া পৌরসভায় যুক্ত হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের স্কেভেটর। পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরীর বিশেষ তদবিরে বিশ্বব্যাংকের সহযোগি প্রতিষ্ঠান এমজিএসপি প্রকল্প থেকে এই স্কেভেটর সংস্থান হয়েছে।
চকরিয়া পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে চলমান প্রায় ৯০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ময়লা সমুহ দ্রুতসময়ে সম্পাদন করার লক্ষ্যে এই স্কেভেটরটি আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাতে সফলও হয়েছেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে নির্বাচিত হবার পর থেকে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী’র নিরলস প্রচেষ্ঠায় চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড এবং পৌরশহরের অলি-গলিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। যার মধ্যে পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে আরসিসি রাস্তা, কার্পেটিং, আরসিসি ড্রেন, কালভার্ট, ক্রেস ড্রেন, লাইটিং, সামাজিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য গাছ রোপন করা হয়েছে। চকরিয়া পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে যেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে তেমনি চকরিয়া পৌরসভা উন্নয়নমূলক কাজের জন্য একে পর এক যুক্ত হয়েছে কোটি টাকা দামে গাড়ি।
হাট-বাজারের কর, দোকান ঘর ভাড়া, গবাদি পশুর হাট ইজারা, অফিস আদালতের পৌরকর, পাবলিক হোল্ডিং কর দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে পৌরসভার কার্যক্রম। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে উন্নয়ন সংস্থার সার্বিক সহযোগিতায় মেগাউন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম এগিয়ে চলছে চকরিয়া পৌরশহরে। যার কারণে এই পৌরশহরের চিত্র দিন দিন বদলে যাচ্ছে।

এদিকে চকরিয়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে উন্নত সড়ক যোগাযোগ, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অলিতে-গলিতে সড়ক বাতিসহ প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থাপন করা হয়েছে একাধিক স্টিলের ডাস্টবিন। প্রতিদিন পৌরসভা থেকে ময়লা ফেলার গাড়ি নিয়মিত ডাস্টবিনগুলো পরিষ্কার করছে। এতে নতুন করে এমজিএসপি প্রকল্প থেকে যুক্ত হয় একটি স্কেভেটর।
এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবির) অর্থায়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্প ছাড়াও ছোট বড় অসংখ্য প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় চকরিয়া পৌরবাসী খুবই আনন্দিত। এছাড়াও পৌরসভার নিজস্ব আয় থেকে এবং ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পৌর এলাকায় হতদরিদ্রদের শীতবস্ত্র, সেলাই মেশিন, গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন মেয়র আলমগীর চৌধুরী।

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে চকরিয়া পৌরশহর। সেইসঙ্গে বদলে যাচ্ছে পৌরবাসীর জীবনমান। পৌরসভার এমজিএসপি প্রকল্পের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে চকরিয়া পৌরশহরের উন্নয়নের কার্যক্রম চলমান রাখতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার মিক্সার অটো মিনি প্লান মিশিন ক্রয় করা হয়েছে। এই মিক্সার মিশিন দ্বারা কম সময়ের মধ্যে সহজেই রাস্তার কাজ করা যাবে। এছাড়াও এমজিএসপি প্রকল্প থেকে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা পরিস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করার জন্য নতুন ভাবে যুক্ত করা হয়েছে কোটি টাকা মূল্যের একটি স্কেভেটর গাড়ি।

তিনি বলেন, পরিকল্পিত উন্নয়নে বদলে দিতে চাই চকরিয়া পৌরসভার চিত্র। এক সময় চকরিয়া পৌর এলাকার বেশিরভাগ রাস্তাঘাট ছিল ভাঙাচোরা। সুপেয় পানির অভাব ছিল স্বাভাবিক চিত্র। রাতে বাতি জ¦লত না, অন্ধকারে রাতে পথ চলতে হতো। মাত্র চার বছরের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। আগামীতে এ খাতে আরও ব্যয় বৃদ্ধি করা হবে।
মেয়র আলমগীর চৌধুরী আরো বলেন, রাস্তার উন্নয়নের বাকি কাজগুলো আগামি জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করা হবে। রাস্তার কাজ শেষ হলে পৌরবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশে পূরণ হবে বলে মনে করি। রাস্তার কাজ ছাড়াও পানির সমস্যা সমাধান এবং রাতে রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, চকরিয়া পৌর এলাকায় শিশুদের বিনোদনের জন্য কোনো পার্ক নেই। শিশুদের জন্য অত্যাধুনিক একটি শিশুপার্ক করার চিন্তা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পৌরসভাকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। মেয়রের দাবি, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে যদি পৌরবাসীর ট্যাক্সের টাকার সঠিক ব্যবহার হতো, তাহলে পৌরসভার উন্নয়নচিত্র অনেক আগে বদলে যেত। নাগরিক সেবা পেতে এতদিন পৌরবাসি অপেক্ষা করতে হতো না।