ফাইল ছবি

নুরুল আমিন হেলালী :

পর্যটন শহর কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল-মোটেল ও কটেজ জোনে অনেকটা অঘোষিত নিরাপদে চলছে পতিতা ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম। রাত গভীর হলেই এসমস্ত হোটেল- মোটেল ও কটেজগুলো রুপ বদলে হয়ে যায় পতিতা ও মাদকের হাট। করোনা শৈতিল্যে পর্যটন শহরে পর্যটক ফিরে আসায় মৌসুমি ব্যবসায়িরা হোটেল- কটেজ কক্ষে দেশি-বিদেশি আগন্তুক পর্যটকদের মনোরঞ্জন দিতে গিয়ে নিশি রমনীদের পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসা। মুলত মেজর( অব:) সিনহা হত্যা ঝড়ের কবলে যখন কক্সবাজার পুলিশে রদবদল চলছে সেই সুযোগে শহরের কটেজজোনে বেড়ে চলেছে পতিতাবৃত্তি,ইয়াবাসেবনসহ বিভিন্ন অপকর্ম। একাজে শত শত রোহিঙ্গা যুবতী-কিশোরী স্বজাতি ও স্থানীয় দালালদের হাত ধরেই সর্বত্র দেহ ব্যবসায় জ’ড়িয়ে পড়ছে।

সুত্রমতে, মুলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগে থেকে আসা অনেক যুবতি যাদের জন্ম ক্যাম্পে তাদের মধ্য থেকেই কক্সবাজার শহরকেন্দ্রিক পেশাদার যৌনকর্মীতে নাম লেখায়। পরবর্তীতে পেশাদার যৌনকর্মীরাই রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সুন্দরী মেয়েদেরকে তাদের মা-বাবার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়ে আসে।
এরপর পতিতাবৃত্তির কাজে তাদের ব্যবহার করে। পতিতাবৃত্তির পাশাপাশি এসব রমনীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে যৌন ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার হার ক্রমশ বাড়ছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে দেশীয় ও রোহিঙ্গা দালাল চক্র। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ সারা দেশে সক্রিয় এ চক্রটি।

অনেক সাইনবোর্ডধারী হোটেল ও কটেজ এর আড়ালে এখানে চলে পতিতা ও মাদকবাণিজ্য। ‘ওপেন সিক্রেট’ চলছে ইয়াবা ও প’তিতার হাট। সকাল-সন্ধ্যা কটেজ জোনের বিভিন্ন সড়কে বিচরণ অপরাধীদের। বিশেষ টোকেন এর মাধ্যমে কটেজে প্রবেশ করে এসব অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ করে রাত ১২টার পর চলে রমরমা ব্যবসা। যেন শহরের কটেজ জোন একটি মিনি পতিতালয়। এসব কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছে অনেক মালিক ও কর্মচারী। তাছাড়া প’তিতা-খদ্দের খোঁজে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু-কিশোরদেরও। কমিশন ভিত্তিতে প’তিতা ও মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে কিছু রিক্সা ও সিএনজি চালক।

নিরাপদ এলাকা হিসাবে মাঝারী থেকে বড় মাপের ব্যক্তিরাও কটেজ জোনে গিয়ে নির্ভয়ে তাদের লালসা সারছে প্রতিনিয়ত। স্থানীয় সূত্রের দাবী, এক সময় দিনের বেলায় হলেও এখন দিন রাত ২৪ ঘন্টাই চলছে কটেজ জোনের অ’পকর্ম। হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন দামের পতিতা ও নেশাজাতদ্রব্য।
এসব কাজে জড়িত রয়েছে স্থানীয় রাঘববোয়ালরা। প্রতিদিন অপরাধ করেও রহস্যজনক কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। কটেজগুলোর নিয়ন্ত্রক সংগঠক থাকলেও অপরাধে জ’ড়িতদের বি’রুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা তারা। এ কারণে বিশ্বের অন্যতম পর্যটন নগরীর কটেজ জোন ‘পাপের স্বর্গ রাজ্য’-তে পরিণত হয়েছে।

অভিযোগ ওঠেছে, এই কটেজ জোনের অধিকাংশ ব্যবসায়ী এখন পর্যটন ব্যবসা ছেড়ে প’তিতা ব্যবসার দিকে ঝুকে পড়েছে। প্রতিরাত বিরাতে প’তিতার ঢল নামে এখানে। প’তিতা ব্যবসাকে দেহ শিল্পে রুপ দিয়েছে অসাধু কটেজ মালিকরা। তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে শ’ক্তিশালী সি’ন্ডিকেট। সিএনজি-রিক্সা চালকদের সাথে মোবাইল নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে চলে এ ব্যবসা। অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যেও রয়েছে যৌন ব্যবসার দালালদের নেটওয়ার্ক।