আবদুল হাকিম (মাসুম)
প্যারিস চূক্তিতে বলা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ঝুঁকি বাড়ার প্রেক্ষিতে বৈশ্বিক উষ্ণতা প্রশমনে প্রাকশিল্পায়ন যূগের তুলনায় তাপমাত্রা কমপক্ষে ২ ডিগ্রি ও ক্রমান্বয়ে তা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে সীমিত রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা।
কিন্তু বর্তমান কোভিড- ১৯ সংকটের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের নামে শিল্পোন্নত দেশসমূহের উদ্যোগে গ্রিন রিকভারি প্রস্তাব করা হলেও প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য দেশসমূহ এ ব্যাপারে উল্টো অবস্থান গ্রহণ করায় বৈশ্বিক গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণের ঝুঁকি উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে ।

এ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের জন্য প্যারিস চুক্তিতে ২০২০ সাল থেকে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবে সামান্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে মাত্র ।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বৈশ্বিক পর্যায়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের পরিচালিত আন্দোলন ‘Fridays for future’ এর উদ্যোগে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ প্রথমবারের মত ‘বৈশ্বিক ক্লাইমেট একশন দিবস’ পালিত হচ্ছে।

সারা বিশ্বের স্কুল শিক্ষার্থীদের নৈতিক এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ( টিআইবি)। একই সাথে টিআইবির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অভিযোজন এবং প্রশমনের জন্যে শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুদানভিত্তিক তহবিল প্রদানেরও দাবি জানানো হয়েছে ।

টিআইবির দাবিতে আরো বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ উদ্ভূত সংকটের পাশাপাশি উপর্যুপরি বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সবুজ জলবায়ু তহবিল থেকে অভিযোজন এবং প্রশমন বাবদ প্রাপ্য অনুদান প্রদানে শিল্পোন্নত দেশসমূহকে দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য পথ নকশা প্রনয়ন ও বাস্তবায়নে এবং সেক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সাথে বাংলাদেশেরও প্রতিশ্রুত প্রশমন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিবর্তে উল্টো জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার প্রদানের মতো প্রকৃতি ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম গ্রহণ থেকে সরে আসতে হবে।

টিআইবি চলমান অতিমারির সুযোগ নিয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলোর গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ বৃদ্ধি এবং ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত না হলে ভবিষ্যতে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট চরম আকার ধারণ করবে বলে মনে করে।

শিল্পোন্নত রাষ্ট্রসমূহের প্যারিস অঙ্গীকার মেনে জলবায়ু প্রশমনে অনতিবিলম্বে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমানো ও ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহকে প্রতিশ্রুত তহবিল নিশ্চিতে স্কুল শিক্ষার্থীদের ‘বৈশ্বিক ক্লাইমেট একশন দিবস’ পালনকে কার্যকর রূপ দেওয়ার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যাওয়ার এখন সময়ের দাবি।

আবদুল হাকিম (মাসুম)
পেশকার পাড়া
কক্সবাজার পৌরসভা
কক্সবাজার ।